Image
জামায়াত নেতা এ টি এম আজাহারুল ইসলামের মুক্তিতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা জামায়াতের শোকরানা সমাবেশ

বাংলাদেশ জামাতে ইসলামী সাবেক ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল কারা নির্যাতিত মজলুম জননেতা এ টি এম আজাহারুল ইসলামের বেকসুর খালাস হওয়ায় ২৯মে বৃহস্পতিবার সন্ধায় মুহিত ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সিদ্ধিরগঞ্জ জামায়েত ইসলামীর পক্ষ থেকে শোকরানা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উক্ত শোকরানা সমাবেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমির মাওলানা আবদুল জব্বার প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন "সত্য সমাগত মিথ্যা অপসৃত" নিশ্চয় মিথ্যার পরাজয় অবশ্যম্ভাবী", তিনি আরো বলেন পতিত স্বৈরাচারী সরকার বিনা বিচারে লক্ষ লক্ষ আলেম ওলামাদের নির্বিচারে জেল জুলুম খাটিয়ে গুম খুন ও ফাসিঁতে ঝুলিয়েছেন। কিন্ত একটা কথা সবার মনে রাখা উচিত আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে পৃথিবীর কারো সাধ্য নেই মারার। বর্ষিয়ান নেতা এ টি এম আজাহারুল ভাই তার দৃষ্টান্ত প্রমান। তাই আসুন আমরা রংয়ে রঙ্গিন হই আমাদের এই প্রাপ্তির উল্লাস প্রকাশ হবে এখন থেকে বেশি বেশি এবাদত করার মাধ্যেমে।

এসময় নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতের সংগ্রামী সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন বলেন বর্ষিয়ান নেতা এ টি এম আজাহারুল ইসলাম ভাইকে যারা বিনা অপরাধে কারাভোগ করিয়েছে তাদের প্রত্যেকেই শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

এসময় সিদ্ধিরগঞ্জ উত্তর থানা আমির মোস্তফা কামাল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ দক্ষিন থানা আমীর আলহাজ্ব কফিল আহমেদ, পশ্চিম থানা আমীর মাহাবুব আলম, পুর্ব থানা আমীর আলি আক্কাস, উত্তর থানা সেক্রেটারি কামরুল ইসলাম রিপন, দক্ষিন থানা সেক্রেটারি সাদ আহমেদ, পূর্ব থানা সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম, সাইদুল হক, আবদুল মতিন সহ স্থানীয় জামায়াত নেতৃবৃন্দ।


Image
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার ষান্মাসিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত

২৪ মে শনিবার সকালে রাজধানী ঢাকার মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে সংগঠনের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার ষান্মাসিক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরবৃন্দ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেলবৃন্দসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার (পুরুষ ও মহিলা) সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান মজলিসে শূরার অধিবেশনে উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতার মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের এই দীর্ঘ পরিক্রমায় জাতির মূল প্রত্যাশার অনেকগুলো আজও অপূর্ণ থেকে গেছে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। নাগরিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মর্যাদাপূর্ণ হেফাযত সংরক্ষণ করতে পারেননি। গত ১৫ বছরের শাসকগোষ্ঠী দেশকে দুঃশাসন উপহার দিয়েছে। তাদের পুরোটা সময় মানুষ দুঃস্বপ্নে বসবাস করেছে। জেল-জুলুমের স্টিমরোলার জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কাউকে বিচারের নামে প্রহসন করে আবার কাউকে বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছে। আয়নাঘর বানিয়ে গুমের সংস্কৃতি চালু করা হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেশে যা ঘটেছে তার সাক্ষী দেশের আপামর জনগণসহ গোটা বিশ্ববাসী। ইতোমধ্যেই জাতিসংঘের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি এবং মানবাধিকার সংগঠন ঐ সময়ের সরকারকে স্পষ্টভাবে দায়ী করে জুলাই-আগস্টের ঘটনার একটি রিপোর্ট পেশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা জাতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে অবস্থান করছি। এই বাঁক সফলভাবে উত্তরণ করতে হবে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাসীসহ দেশবাসীকে বিচলিত করেছে। এব্যাপারে জামায়াতে ইসলামী একটি দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। আমরা দ্রুততম সময়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের জরুরি সভা করে দেশের চলমান বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আলোচনায় আমরা বলেছি সংঘাত-সংঘর্ষ এবং কাদা ছোড়াছুড়ি করে জাতিকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেওয়া একেবারেই সমীচীন হবে না।
তিনি বলেন, জামায়াতের রাজনীতি দেশ ও জনগণের কল্যাণে। জামায়াত সবসময় জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দলীয় পরিকল্পনা-কর্মসূচি রচনা ও পরিচালনা করে। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে কতিপয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এই অনিশ্চয়তা উত্তরণে আমরা অন্তর্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে সর্বদলীয় ডায়ালগ করার আহ্বান জানিয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি সকলের সন্তোষজনক আলোচনার মাধ্যমে জাতির আতঙ্ক ও আশঙ্কা দূর হবে এবং এ সংকটের উত্তরণ ঘটবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, ২০১৪ তে ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়, ২০১৮ তে নিশি রাতের ভোট এবং ২০২৪ এ ডামি আর আমি’র প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে জাতির সাথে চরম তামাশা করা হয়েছে। এ অবস্থায় জাতিকে একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে হবে; যার মাধ্যমে সত্যিকার অর্থে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটবে এবং জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমরা সরকারের কাছে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবি করেছিলাম। সুস্পষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় জনগণের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা সরকারের প্রতি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করছি। এরপর আমাদের দাবি ছিল ফ্যাসিবাদের সুষ্ঠু বিচার। এ বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ। তবে জাতির কাছে বিশ্বাসযোগ্য বিচারকার্য অনতিবিলম্বে দৃশ্যমান হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি দুটি স্পর্শকাতর বিষয় জাতির সামনে এসেছে। মানবিক করিডোর ও চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ব্যবস্থাপনা। এব্যাপারে সিকিউরিটি এক্সপার্ট এবং দেশের সকল পক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। অথবা নির্বাচিত পার্লামেন্ট-এর জন্য রেখে দেওয়া যেতে পারে।
সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের বিষয়। ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁকে তাদের মর্যাদাপূর্ণ অবদান রয়েছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা উচিত নয়। জাতির প্রত্যাশা সেনাবাহিনী স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার মাধ্যমে দেশ ও জাতির সেবা করবে এবং দেশের রাজনৈতিক দলগুলো ও সেনাবাহিনী যার যার অবস্থান থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের দিকে নজর দিবে।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা একাধিকবার বলেছেন জাতীয় নির্বাচন তিনি এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান। এতে আমাদের আস্থা রয়েছে। এব্যাপারে আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই।
ফিলিস্তিন প্রসঙ্গে আমীরে জামায়াত শান্তিকামী বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ফিলিস্তিনের জনগণ দশকের পর দশক ধরে নির্যাতিত এবং নিষ্পেষিত হচ্ছে। গাজা ও ফিলিস্তিনে মানবতাবিরোধী যুদ্ধ চলছে। আমরা জাতিসঙ্ঘসহ শান্তিকামী ও মানবতাবাদী বিশ্বসম্প্রাদয়কে যুদ্ধ বিরতি নয়, স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। সিরিয়াকে সে দেশের জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী চলতে দেওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
আরাকান প্রসঙ্গে আমীরে জামায়াত বলেন, আরাকানের রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিয়ে সম্মান ও নিরাপত্তার সাথে পুনর্বাসিত করতে হবে। এব্যাপারে জাতিসংঘকেই প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে।
আমীরে জামায়াত নিজ দলের দায়িত্বশীলদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সকল ক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। সকল ব্যাপারে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে সমাজের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে দিক নির্দেশনা দিতে হবে।
সাংবাদিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা সমাজের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আপনাদেরকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। আমাদের প্রত্যাশা আপনাদের ইতিবাচক ভূমিকা সমাজকে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আসুন আমরা কালোকে কালো এবং সাদাকে সাদা বলি।
সবশেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে জনপ্রত্যাশার জায়গায় পৌঁছে দেয়ার জন্য আমাদের প্রিয় সংগঠন অতীতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে; ভবিষ্যতের জন্যও আমরা প্রস্তুত। আল্লাহ তায়ালার বিধানে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এই বিধানের মাধ্যমেই সব ধর্মের মানুষের জীবন-সম্পদ ও ইজ্জতের নিরাপত্তা এবং তাদের নিজ নিজ অধিকার নিশ্চিত করার আমাদের লড়াই-সংগ্রাম, চেষ্টা-প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আসুন আমরা একটি শান্তিপূর্ণ, দুর্নীতিমুক্ত মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ হই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রিয় দেশকে সকল ধরনের ক্ষতি ও ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করুন। অনৈক্য ও বিভাজন তৈরি না করি। দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিই।


Image
একজন খুনের আসামী কিভাবে গ্রেপ্তারের পূর্বে প্রেস ব্রিফিং করে?

প্রশাসনের ঘাড়ে এখনো ফ্যাসিষ্টদের প্রেতাত্না ভর করে আছে!

আওয়ামী আমলে কোন মামলা ওয়ারেন্ট ছাড়াই গভীর রাতে জামায়াত-বিএনপিসহ বিরোধী মতের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ সামন্যতম সময়ক্ষেপণ করেনি,বরং বাড়ী-ঘর দরজা-জানালা ভেঙ্গে টেনে-হিচড়ে লাঞ্চিত-অপমানিত করে তাদের মা-বাবা স্ত্রী-সন্তানদের সামনে থেকে অমানবিক ভাবে নিয়ে গিয়েছে।

কিন্ত গতকাল দেখলাম নারায়ণগঞ্জে গণ–অভ্যুত্থানের
৫ হত্যা মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে যথেষ্ট বিলম্ব করেছে, এই দূর্বলতার কারণ মানুষ জানতে চায় । তার চেয়েও সাংঘাতিক বড় প্রশ্নবিদ্ধ বিষয় হলো একজন খুনের আসামী কিভাবে গ্রেপ্তারের পূর্বে প্রেস ব্রিফিং করে?

এতে স্পষ্ট বুঝা যায় প্রশাসনের ঘাড়ে এখনো ফ্যাসিষ্টদের প্রেতাত্না ভর করে আছে!


Image
জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার আপিল দ্রুত শুনানির আবেদন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল বিভাগে দ্রুত শুনানির আবেদন করেছে। রোববার সকালে জামায়াতের পক্ষে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৩ সদস্যের বেঞ্চে এ আবেদন করেন।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল বিভাগে দ্রুত শুনানির আবেদন করেছে। রোববার সকালে জামায়াতের পক্ষে ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৩ সদস্যের বেঞ্চে এ আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, জামায়াতের আপিল শুনানি শুরু হলেও হঠাৎ তা স্থগিত হয়ে যায়। যেহেতু দলটির নিবন্ধন ও রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এ মামলার সঙ্গে সরাসরি জড়িত, তাই এ মামলাটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত শুনানি প্রয়োজন।

শুনানি শেষে আপিল বিভাগ জানায়, বিষয়টি মঙ্গলবার বা বুধবার আদালতে শুনানির জন্য উঠতে পারে। এ বিষয়ে জামায়াতের আইনজীবী ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী আমার দেশ কে জানান, আদালত এ সপ্তাহেই শুনানি হবে বলে আমাদের জানিয়েছেন।

এর আগে, চলতি বছরের ১২ মার্চ রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিল শুনানি শুরু হয়।

গত বছরের ২২ অক্টোবর রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বাতিল হওয়া নিবন্ধন ফিরে পেতে খারিজ হওয়া আপিল পুনরুজ্জীবিত করে দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগ। এর ফলে নিবন্ধন ও দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা ফিরে জামায়াতের আইনি লড়াই করার পথ খুলে যায়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, এডভোকেট আসাদ উল্লাহ প্রমুখ । রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড আলী আজম।


Image
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরী আমীর সম্মেলন অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দু’দিন ব্যাপী জেলা ও মহানগরী আমীর সম্মেলন আজ ৩ মে সকাল ৯ টায় মগবাজারস্থ আল-ফালাহ মিলনায়তনে শুরু হয়েছে। এ সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য পেশ করেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। সম্মেলন পরিচালনা করেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, মাওলানা মোঃ শাহজাহান, এড. মুয়াযযম হোসাইন হেলাল, এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়েরসহ কেন্দ্রীয় নির্বাহী ও কর্মপরিষদ সদস্য, জেলা ও মহানগরী আমীরবৃন্দ।
আমীরে জামায়াত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসের পর দীর্ঘ ১৪ বছরে এ ধরনের প্রোগ্রাম করার সুযোগ পাইনি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আবার এই সুযোগ করে দিয়েছেন। এজন্য মহান মনিবের দরবারে লাখো শুকরিয়া আদায় করি আলহামদুলিল্লাহ। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ এবং তাদের সঙ্গীরা বাংলাদেশকে শাসন এবং শোষণ করেছেন। পুরো সময় জুড়ে তারা এই দেশের বিরোধী দল, মত এবং বিশেষভাবে ইসলামপন্থী জনগণের উপর বিভিন্ন পর্যায় তাণ্ডব চালিয়েছে। কমপক্ষে তিনটি গণহত্যা সংঘটিত করেছে। প্রথম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে তৎকালীন বিডিআর হেডকোয়াটার পিলখানায়। যেখানে আমরা হারিয়েছি ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক প্রতিশ্রুতিশীল সামরিক অফিসার। এর পরে গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে, হেফাজতের আহ্বানে যে সমাবেশ হয়েছিলো সেই সমাবেশে রাতের বেলা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে গোটা অন্ধকারে নির্বিচারে মানুষগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। আর তৃতীয় গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে গত বছরের জুলাই মাসের মধ্য দিনগুলো থেকে আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত। ফ্যাসিবাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর অনেক নেতা সহকর্মী, বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং আলেম-উলামা।
তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবাণীতে গত বছরের আগস্ট মাসের ৫ তারিখ ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আপনারা সাক্ষী প্রথম তিনদিন কার্যত কোন সরকার ছিলো না। এ রকম পরিবর্তন যেসব দেশে সংঘটিত হয়েছে সেখানে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমরা পারিপার্শ্বিক এ ঘটনাবলী থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং খুবই অনুভব করছিলাম জাতিকে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ধৈর্য ধরার আহ্বান করা প্রয়োজন। আমরা ৫ আগস্ট রাতেই সে কাজটা করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, এ পরিবর্তনের পর আমাদের প্রথম কাজ ছিলো শহীদ পরিবারের কাছে যাওয়া এবং দাঁড়ানো। দল হিসেবে নিশ্চই আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। তারপরেও মানবিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা চেষ্টা করেছি শহীদ পরিবারের কাছে যাওয়ার। তাদেরকে সান্ত্বনা দেয়ার এবং একটা সংগঠন হিসেবে যতটুকু সম্ভব সেই সাপোর্টটুকু তাদেরকে আমরা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আমাদের সাপোর্টও তারা অনুগ্রহ করে গ্রহণ করেছে। এরপর আমাদের অগ্রাধিকার ছিলো যারা আহত এবং পঙ্গু হয়েছেন তাদের দিকে নজর দেয়া।
তিনি আরও বলেন, দেশে যদি অস্থিরতা বিরাজ করে, যদি দেশের অর্থনীতি মুখ থুবরে পড়ে তাহলে আমরা সকলেই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এজন্য এখানে নাগরিক হিসেবে আমাদের সকলের দায় রয়েছে। তবে পরিবর্তনকামী একটি গঠনমূলক দল হিসেবে জামায়াতের দায় অনেক বেশী। এজন্য আমরা সমসময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার চেষ্টা করি।
তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, খুন, লুণ্ঠন ও অপহরণ করেছেন, জনগণের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন তাদেরও আমরা ন্যায্য বিচার দাবি করি। তারা যেন কোনভাবেই কোন ফাঁকফোকরে পার পেতে না পারে। আইনের আওতায় এনে তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এ দাবি আমরা করে আসছি এবং এ দাবি আমরা করতেই থাকবো। এ বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের দাবি থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা এরপরে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করেছিলাম, এ সরকার গঠিত হয়েছে জনআকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে। তাদেরকে ন্যায়সঙ্গত কাজে সহযোগিতা করা। তাদের জনস্বার্থবিরোধী কোন কাজ আমাদের সামনে ধরা পড়লে আমরা সহযোগিতা করবো না, আমরা পরামর্শ দিবো, প্রতিবাদ করবো এবং ক্ষেত্র বিশেষে আবার প্রতিরোধ করবো।
তিনি বলেন, অবশ্যই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হতে হবে। এই সুষ্ঠু এবং বস্তুনিষ্ঠতার স্বার্থে কতিপয় সংস্কার অবশ্যই করতে হবে। এ বিষয় আমরা আমাদের সুপারিশমালা সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর কাছে পেশ করছি। আমরা সকল দলের প্রতি আহ্বান জানাবো রাজনীতি নিজের জন্য নয়। রাজনীতি দেশ এবং জনগণের জন্য। আমরা যত বেশী সহযোগিতা করবো ততো বেশী জাতি উপকৃত হবে। ততোটাই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু এবং সুন্দর হবে। ইতোমধ্যে আমরা বলেছি যে, অবশ্যই যারা অপরাধী তাদের বিচারটা দৃশ্যমান হোক জাতি এটা দেখতে চায়। এ স্বল্প সময় সব বিচার করা সম্ভব নয় এটা আমরাও বুঝি। কিছু বিচারতো করতে হবে। যাতে জাতির মনে আস্থা তৈরী হয়। যারা প্রধান অপরাধী তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দৃশ্যমান বিচার জাতির সামনে অবশ্যই উপস্থাপন করতে হবে। আমরা সরকারের একটা দুর্বলতা লক্ষ্য করি, বিচারের ক্ষেত্রে আমরা আরো গতি চাই। সরকার বেশী তৎপর হয়ে এই কাজটা করবে, এটা আমরা দেখতে চাই। যদি এদের বিচার হয় তাহলে আগামী নির্বাচনেও কালো টাকা এবং পেশী শক্তির প্রভাব খাটাতে পারবে না। আর এ রকমের দুঃসাহস হয়তো কেউ দেখাবে না। কিন্তু বিচার যদি না হয় এর আশঙ্কা তো থেকেই যাবে। আমরা এই নির্বাচনকে অর্থবহ করার জন্য এবং জনমতের শতভাগ প্রতিফলন ঘটানোর জন্য আমাদের দেশের পার্লামেন্টকে কোয়ালিটিসম্পন্ন পার্লামেন্ট দেখতে চাই। এজন্য নির্বাচনকে পেশীশক্তি এবং কালো টাকার প্রভাব থেকে মুক্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আনুপাতিক হারে প্রতিনিধিত্বশীল ব্যবস্থায় নির্বাচন হতে হবে। বিশ্বের ৬২টি দেশ এটা অনুসরণ করে। বেশীর ভাগ দেশ হচ্ছে উন্নত দেশ বলে যারা পরিচিত তারা সুফল পেয়েছে। এটা যারা একবার শুরু করেছে তারা আর বাদ দেয়নি। আমরা ট্রেডিশনাল নির্বাচন পদ্ধতি দেখেছি। তার ভিতরে সংসদের মধ্যে আইন প্রনেতা হিসেবে মনোনীত ব্যক্তিরা লেখা দেখে যারা পড়তে পারেন না তারাও সংসদ সদস্য হয়েছে। তারা কি আইন রচনা করে বাংলাদেশের মানুষকে দিবেন? তারা কোন আইনটা সংস্কার সাধন করার মতো যোগ্যতা রাখেন? এজন্য আমরা বলেছি যে, আনুপাতিক হারে সেখাবে যাবে। যে যতো পার্সেন্ট ভোট পাবে সে ততো আসন পাবে। এতে করে কোন দলকে ছোট এবং বড় বলার কারো সাহস হবে না। দল ছোট হউক বড় হউক দল দলই এবং কোন দল কারো দয়ার পাত্র হবে না। তার নিজের দল নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, অতিসম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর সুপারিশমালা সাবমিট করেছে। আমরা বিস্মিত, আমাদের বিদ্যমান কালচার তমদ্দুন এর সম্পূর্ণ বিপক্ষে। তারা কিছু সুপারিশমালায় এনেছেন এগুলো বিবেচনা করার প্রশ্নই আসে না। শুধু তাই নয় তাদের কিছু কিছু সুপারিশ আল্লাহর বিধানের বিপক্ষে দাঁড় করিয়ে পেশ করা হয়েছে। তাদের এই সুপারিশ গ্রহণ করলে কুরআন পরিবর্তন হয়ে যাবে। অথচ আল্লাহ তায়ালা কুরআন নাযিল করে বলেছেন, কুরআন নাযিল করেছি আমি, রক্ষাও করবো আমি। এখানে একটা হরফ, নুকতাও কেউ পরিবর্তন করতে পারবে না।
আমীরে জামায়াত বলেন, প্রধান উপদেষ্টা এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার কথা বলেছেন। ফেব্রুয়ারির শেষে এবং মার্চের তিন ভাগের দুই ভাগ সময় জুড়ে রোযা থাকবে, তার পরেই ঈদ। এই সময় কোন নির্বাচনের সময় নয়। দু’টি সময় আমরা নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত মনে করি। একটি হচ্ছে ফেব্রুয়ারি মাস রোযা শুরুর আগে। আরেকটা হচ্ছে যদি কোন কারণে এই সময়ের ভিতরে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে তাহলে ম্যাক্সিমাম এপ্রিল পার হওয়া উচিত নয়।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর শহীদের রক্ত ও পঙ্গু ভাই বোনদের প্রতি সকলের সম্মান দেখানো উচিত ছিলো। কিন্তু কোন কোন দল সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে, তাদের নিজেদের সহকর্মীদেরকে সামাল দিতে। এই জন্য যেখানেই যাই এখন শুনতে হয় রেট আগের চেয়ে বেশি। কেন রেট আগের চেয়ে বেশি হবে? রেটই তো থাকবে না। সর্বত্রই কথা শুনতে হচ্ছে, কেন এমনটি শোনা যায়। চিহ্নিত অপরাধীদের ধরে পুলিশ থানায় নেয়ার আগেই তদবির থানায় চলে আসে। এই ধারা বন্ধ করতে হবে। স্বয়ং জামায়াতে ইসলামীর লোকেরাও যদি এটা করে মানুষ জামায়াতে ইসলামীকে ঘৃণা করবে। এ কাজ যারাই করবে তাদেরকে মানুষ ঘৃণা করবে।
তিনি বলেন, বিশেষ করে আমরা দেখতে পাচ্ছি গাজায় ফিলিস্তিনের উপর বছরের পর বছর জুলুম করা হচ্ছে। আমরা চাই এটার অবসান হোক। পার্শ্ববর্তী দেশসহ যেখানে ছুতোনাতায় বিশেষ করে ধর্মীয় আবেগকে উস্কে দিয়ে জুলুম করা হয়। এটা বন্ধ করা হোক।
তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, আমরা একটা মজলুম দল। যুগে যুগে আমাদের উপর বিভিন্ন পক্ষ জুলুম করেছে। আমরা কোনও প্রতিশোধ নিতে চাই না। তবে আমরা যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, নিহত হয়েছি, আহত হয়েছি, গুমের শিকার হয়েছি অন্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, সেই জায়গাগুলোতে অবশ্যই আমরা আইনের মাধ্যমে প্রতিকার চাওয়ার অধিকার রাখি এবং আমরা চাইব।
তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছরসহ স্বাধীনতার পর থেকে যারা দেশের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাঁচার করেছেন, এদের সকলের অপকর্মের শ্বেতপত্র জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি এগুলোর সাথে রাজনীতির কালো হাত ছিল, নাহলে এত বড় অপরাধ তারা করতে পারতো না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, বাংলাদেশ থেকে গত সাড়ে ১৫ বছরে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আমরা চাই পাঁচারকৃত সকল টাকা ফিরিয়ে এনে রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা দেয়া হবে এবং জনকল্যাণে সেটা ব্যয় হবে।
তিনি বলেন, সাংবাদিক বন্ধুগণের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, আপনারা এই জাতির সন্তান, এই জাতির বিবেক, আয়না। আপনাদের দর্পণে সেই চিত্রগুলো তুলে ধরুন এবং আপনারাও এই কাজে সহযোগিতা করুন। তাহলে দেশ আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে। আপনারা দায়িত্বশীল আচরণ করে সাহসিকতার সাথে এগিয়ে আসবেন সেই প্রত্যাশা আমরা রাখতে চাই।
আমরা মহান রবের দরবারে দোয়া করি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কুরআন ভিত্তিক যে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র করতে চায় আল্লাহ যেন সেই কল্যাণ রাষ্ট্র গড়ার পথে আমাদেরকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেন। আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন জাতিগঠনের যাত্রাপথে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার তওফিক দান করুন।


Image
যুব সমাজকে গড়ে তুলতে হলে কোরআন ও ইসলাম ছাড়া অন্য বিকল্প নেই: মুহাম্মদ আবদুল জব্বার

সিদ্ধিরগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী উত্তর থানা শাখার উদ্যগে এক বিশাল সহযোগী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ১লা মে বিকাল ৪ টায় অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়নগঞ্জ মহানগরীর আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার। উক্ত সমাবেশে সিদ্ধিরগঞ্জ উত্তর থানা শাখার আমির মাওলানা মোস্থফা কামালের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়নগঞ্জ মহানগর সেক্রেটারী ইঞ্জিঃ মনোয়ার হোসাইন ও সহকারী সেক্রেটারী মোহাম্মদ জামাল হোসাইন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, আজ মহান মে দিবস । আজকের এ দিনে শ্রমের উপযুক্ত মূল্য ও দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজের দাবিতে ১৮৮৬ সালে সংগ্রামের সূচনা হয়েছিলো। শেষন ও নির্যাতন হতে মেহনতি মানুষের মুক্তি, তাদের ন্যায্য অধিকার আদায় এবং সামজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বদ্ধ পরিকর। এর ধারাবাহিকতায় নারায়গঞ্জ মহানগরী মেহনতী মানুষের জন্য বেশ কিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছে যা বাস্তবায়নে আমরা বদ্ধ পরিকর। জামায়াত ইসলামী ক্ষমতায় এলে এ সব মেহনতি মানুষের জন্য নারায়নগঞ্জে একটি হাসপাতাল করা হবে। যেখানে শুধেু শ্রমিক ও অসহায় মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। নরী শ্রমীকদের জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে গার্মেন্স নারী কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে গার্মেন্স নারী কর্মীদের নিরাপত্তার তেমন সুব্যবস্থা নাই। আমরা ক্ষমতায় গেলে এ সব নারী কর্মীদের নিরাপত্তার সুব্যবস্থ নিশ্চিত করব। তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের সময় আমরা আপনাদের কাছে কোনো সামাজিক কাজ নিয়ে আসতে পারিনি। এমন কি মসজিদের ইমাম পর্যন্ত কথা বলতে পারে নাই। কিন্তু এখন সময় এসেছে। ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে ফ্যসিস্ট হাসিনা পালিয়ে গেছে। তাই দল মত নির্বিশেষে এক হয়ে দেশ ও জাতির জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। দেশ পুনর্ঘঠনে সকলকে এক্যবদ্ধ থেকে কাজ করে যেতে হবে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী যতদিন থাকবে ততদিন মানুষকে কোরআনের দিকে, ইসলামের দিকে ডাকবে এবং ন্যায়ের পথে থাকার জন্য আহ্বান জানাবে। বর্তমানে যে আইন চালু আছে সে আইনে কোন মানুষের শান্তি নাই, সমাজে শান্তি নাই এমন কি পরিবারেও শান্তি নাই। বিগত সরকার দেশের সমস্ত প্রতিষ্ঠান গুলোকে ধংশ করে গেছে। শুধু দেশ নয় তারা পরিবারগুলোকেও ধংশ করে ফেলেছে। যুবকদেরকে মাদকাসক্ত করে যুব সমাজকে পঙ্গু করে ফেলেছে। তাই দেশ সমাজ পরিবার এবং যুব সমাজকে গড়ে তুলতে হলে কোরআন ও ইসলাম ছাড়া অন্য বিকল্প নেই। বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম সে লক্ষেই কাজ করে যাচ্ছে।

উক্ত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, মজলিশে শূরা সদস্য ইঞ্জিঃ আব্দুল বাকি, থানা কর্মপরিষদ সদস্য কামরুজ্জামান রিংকু, থানা সেক্রেটারি কামরুল ইসলাম রিপন, ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুল খালেক, রমজান আলি খান, নাছির উল্লাহ প্রধান, নাছির উদ্দিন, রাকিব, ইব্রাহিম খলিল, সাইদুল হক, শহিদুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ দিপু প্রমুখ।


Image
আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়ন হলেই শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে- মুহাম্মদ আবদুুল জব্বার

১মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে নারায়ণগঞ্জ মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যােগে সমাবেশ ও র‍্যালির আয়োজন করা হয়। র‍্যালিটি শহরের চাষাঢ়া হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক গুলো পদক্ষিন করে মিশনপাড়া মোড়ে এসে শেষ হয়। র‍্যালিতে অংশগ্রহণ শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী আমীর মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার। এসময় তিনি বলেন মানুষের বানানো কোন তন্ত্র, মন্ত্র দিয়ে শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না। শ্রমিকের শরীরেরের ঘাম শুকানোর আগে ন্যায অধিকার দিতে পারে একমাত্র আল্লাহর আইন আল কুরআন। তিনি আরো বলেন বিগত আমলে একদলকে দেখেছি তারা বড় বড় কথার বুলি দিয়ে সরকারি অর্থ লুটপাট করে শ্রমিকদের করেছে বঞ্চিত। এধরনের অন্যায় যারা করবে তাদেরকে শ্রমিক জনতা রুখে দিবে।

উক্ত সমাবেশ ও র‍্যালিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি হাফেজ আবদুুল মোমিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সোলাইমান হোসাইন মুন্নার সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদানে উপস্থিত ছিলেন মহানগরী জামায়াতের সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, এইচ এম নাসির উদ্দিন, মহানগরী কর্ম পরিষদের সদস্য মাওলানা সাইফুূদ্দিন মনির, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মহানগরী সহ-সভাপতি মুন্সী মোঃ আব্দুল্লাহ ফাইইসুল, সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন, অফিস সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম সিকদার, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, মহানগরীর কোষাধক্ষ্য খোরশেদ আলম রবিন, নির্বাহী সদস্য এরশাদ খান ইকবাল হোসাইন আক্তার হোসেন, মহানগরী ও থানা শ্রমিক ফেডারেশন ও বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।


Image
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক এর হাতে ২৪ এর জুলাই আগস্ট আন্দোলনের শহীদদের স্মারক তুলে দিচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর জামায়াত নেতৃবৃন্দ

২৯ এপ্রিল সোমবার দুপুরেনারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মহোদয়ের এর হাতে ২৪ এর জুলাই -আগস্ট আন্দোলনে শহীদদের স্মারক গ্রন্থ সহ সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে শহীদদের তথ্য ভিত্তিক ডকুমেন্টারি স্বারক তুলে দেন জামায়াত নেতৃবৃন্দ।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ মহানগরী শাখার আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জনাব জাহিদুল ইসলাম মিঞার হাতে স্বারক তুলে দেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা আমীর জনাব মমিনুল হক সরকার, নারায়ণগঞ্জ মহানগরী সেক্রেটারি ইঞ্জিনিয়ার মানোয়ার হোসাইন, এডভোকেট জাহাঙ্গীর দেওয়ান, এডভোকেট নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য ২৪ এর জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হাসিনা সরকারের নির্বিচারে ছাত্র- জনতার উপর হামলার ঘটনায় প্রায় ১৮ শত শাহাদাৎ বরণ করে, জামায়াত সেই সকল শহীদদের নিয়ে স্বারক গ্রন্থ তৈরী করে।


Image
আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে জামায়াতে ইসলামী কাজ করে যাচ্ছে - মুহাম্মদ আবদুল জব্বার

বন্দর থানা সাংগঠনিক উত্তর থানা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যােগে ২৮ এপ্রিল সোমবার বাদ আসর বন্দর নবীগঞ্জ জালাল সরদার জামে মসজিদ সংলগ্ন মোড়ে সাংগঠনিক দিন দফা বাস্তবায়নে ব্যাপক গণসংযোগ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত দাওয়াতী গণসংযোগে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার। এসময় তিনি বলেন মানুষরে বানানো কোন আইন দিয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব না। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আল্লাহর জমিনে আল্লাহর আইন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। আর সেই কাজটিই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী করে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন জীবন চলার পথে সর্ব ক্ষেত্রে আল্লাহর আইন মানতে হবে। মসজিদে গেলে আল্লাহর লোক, আর বাহিরে অমুক ভাইয়ের লোক। এমন চরিত্র থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে।
বন্দরে সর্বস্তরের মাঝে গণসংযোগ কালে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ জামাল হোসাইন, মহানগরী শূরা সদস্য মুহাম্মদ জাকির হোসাইন, বন্দর উত্তর থানা আমীর মাওলানা মুফতি আতিকুর রহমান, থানা নায়েবে আমীর রফিকুল ইসলাম, সেক্রেটারি জহুরুল ইসলাম প্রমূখ।


Image
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ব্যাখা প্রদান ডা: তাহেরের

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের গত ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সফররত চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে বৈঠকের পর এ সম্পর্কে যে ব্রিফিং দিয়েছেন তাতে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাঁর বক্তব্যের ব্যাখ্যা প্রদান করে ২৮ এপ্রিল নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন:-

“গত ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সফররত চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির সাথে বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিং-এ আমি যে বক্তব্য দিয়েছি তাতে মূলত বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সম্মানজনক ও নিরাপদভাবে তাদের নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করার ব্যবস্থা ও তাদের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তোলার বিষয়টি বুঝাতে চেয়েছি। আমার বক্তব্যের মাধ্যমে কোনো ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হলে তা এ বিবৃতির মাধ্যমে নিরসন হবে বলে আমি আশা করি। এটিই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর দৃষ্টিভঙ্গি