ফিলিস্তিনের রাফায় দখলদার ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
ফিলিস্তিনের রাফায় দখলদার ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান ৯ মে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ঘর-বাড়ি ও ভূমি জবর দখল করে তাদের উৎখাত করে দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ ৭৫ বছর যাবত ইসরাইলিরা ফিলিস্তিনে বর্বর গণহত্যা ও সন্ত্রাস চালাচ্ছে। পুরো ফিলিস্তিনে গত বছর ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার বেসামরিক সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৮০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছে, যাদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাস্তুচ্যূত করা হয়েছে। বর্বর ইসরাইলিদের হাত থেকে হাসপাতাল, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুল, কলেজ, আশ্রয় কেন্দ্র কোনো কিছুই রেহাই পায়নি। গাজায় এ পর্যন্ত ৭টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবং এসব গণকবর থেকে ৫২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের ওপর অবৈধ ইসরাইলি বাহিনীর এসব আগ্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। আমরা মানবতার দুশমন ইসরাইলি বাহিনীর এইসব বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, গাজায় হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত রাফাতে ১৫ লাখ বাস্তুচ্যূত নিরীহ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। খাদ্য ও পানির অভাব দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই অমানবিক সংকটের মধ্যেই দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ভারী ট্যাংক নিয়ে রাফাহ ক্রসিংসহ কিছু এলাকা দখল করে হামলা শুরু করেছে এবং গাজায় খাদ্য সামগ্রী প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, এ অবস্থায় রাফায় পুরোমাত্রায় স্থল অভিযান চালালে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে এবং মানবিক বিপর্যয় দেখা দিবে, যা সামাল দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে ইসরাইলিরা অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইন-কানুন, রীতিনীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ এবং জাতিসংঘ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন থামাতে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্ববাসীর কাছে এ কথা দিবালোকের মত স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।
ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা ওআইসি, জাতিসংঘ, শান্তিকামী গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের শাহাদাত কবুল করার এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতার জন্য আমি মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করছি। সেই সাথে নিহতদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও আহতদের প্রতি এবং ফিলিস্তিনি সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।”