15 49.0138 8.38624 arrow 0 both 0 4000 1 0 horizontal https://bjingm.org 300 4000 - 0

ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন

বইটি মূলত বক্তৃতাঃ দায়িত্বশীলদের এক শিক্ষা শিবিরে মাওলানা নিজামী “আনুগত্য, পরামর্শ ও ইহতেসাব” বিষয়ে আলোচনা পেশ করেন। শিক্ষা শিবিরে অংশগ্রহণকারী অনেকেই আলোচনাটি বই আকারে প্রকাশের জন্য প্রস্তাব করেন। পরবর্তীতে বইটি তিনি রচনা করেন।

★ বইটিতে সাতটি অধ্যায় রয়েছে। যথাঃ-

১. ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠন,
২. ইসলামী আন্দোলনের শরয়ী মর্যাদা,
৩. ইসলামী আন্দোলনের সাফল্য,
৪. ইসলামী সংগঠন,
৫. আনুগত্য,
৬. পরামর্শ এবং
৭. সমালোচনা ও আত্ম-সমালোচনা।

প্রথম অধ্যায়ঃ
ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠনঃ-

আন্দোলনের অর্থ ও সংজ্ঞাঃ আন্দোলন, Movementএবং ﺣﺮﻛﺔ (হারাকাতুন) এখন একটা রাজনৈতিক পরিভাষা হিসেবেই প্রচলিত। যার সাধারণ অর্থ কোন দাবী -দাওয়া প্রতিষ্ঠার জন্যে এবং কোন কিছু রদ বা বাতিল করার জন্যে কিছু লোকের
সংঘবদ্ধ নড়াচড়া বা উদ্যোগ গ্রহণ করা। এক কথায়, সুনিদির্ষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যেপরিচালিত সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা বা সংগ্রাম সাধনার নামই আন্দোলন।
ইসলামের অর্থ ও সংজ্ঞাঃ- ইসলাম শব্দের অর্থ আনুগত্য করা, কোন কিছু মাথাপেতে নেয়া। ইসলাম শব্দের মূল
ধাতু ﺳﻠﻢ এর অর্থ আবার শান্তি এবং সন্ধি। পারিভাষিক অর্থে একমাত্র আল্লাহ প্রদত্ত ও রাসূল (সাঃ) প্রদর্শিত জীবন-পদ্ধতি অনুসরণ করা এবং এর বিপরীত সমস্ত মত ও পথ পরিহার করে চলাকেই বলা হয় ইসলাম। মানুষের ইহকালীন শান্তি এবং পরকালীন মুক্তির এটাই একমাত্র সনদ।

ইসলাম ও আন্দোলনঃ-

আল কোরআন ইসলামকে আদ-দ্বীন হিসেবে (অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান) ঘোষণা করেই শেষ করেনি। বরং সেই সাথে এই ঘোষণা ও দিয়েছে, এই দ্বীন এসেছে তার বিপরীত সমস্ত দ্বীন বা মত ও পথের উপর বিজয়ী হওয়ার জন্যেই। (আত তওবা: ৩৩, আল ফাতহ ২৮, আস-সফ:৯) কোন বিপরীত শক্তির উপর বিজয়ী হওয়ার স্বাভাবিক দাবীই হলো একটা সর্বাত্মক আন্দোলন, একটা প্রাণান্তর সংগ্রাম, একটা সার্বিক বিপ্লবী পদক্ষেপ। এই কারণেই আল কোরআনে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহকে ঈমানের অনিবার্য দাবী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইসলামী আন্দোলনের পরিধিঃ

আল কোরআন দ্বীন প্রতিষ্ঠার গোটা প্রচেষ্টার বিভিন্নমুখী কার্যক্রম এবং প্রতিষ্ঠা লাভের পর তার হেফাযতের উদ্দেশ্যে বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ- এই সব কিছুকেই জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর মধ্যে শামিল করেছে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার সূচনা থেকে সাফল্য লাভ পর্যন্ত এবং সাফল্যের পরবর্তী করণীয় বিষয়ে যেসব কার্যক্রম গ্রহণ করতে হয় সে সবের অর্থ এবং তাৎপর্য বুঝলে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ বা ইসলামী আন্দোলনের পরিধির ব্যাপক রূপ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভ করা সহজ হয়ে যায়। আল কোরআনের আলোকে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর অর্ন্তভুক্ত কাজগুলোকে মোটামুটি ৫টি ভাগে ভাগ করা যায়।

ইসলামী আন্দোলন বা জিহাদের পর্যায় ৫ টি। যথাঃ-
(১) দাওয়াত ইলাল্লাহ
(২) শাহাদাত আ’লান্নাস
(৩) কিতাল ফি সাবিলিল্লাহ
(৪) ইকামাতে দ্বীন
(৫) আমর বিল মা’রূফ ও নেহী আনিল মুনকার

দাওয়াত ইলাল্লাহঃ-
মানুষের জীবনে ও আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন আল্লাহর নির্দেশে নবী রাসূলদের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়েছে। সমস্ত আম্বিায়ায়ে কেরামের দাওয়াতের মূল সুর, মূল আবেদন এক ও অভিন্ন। সবার দাওয়াতের মধ্যে প্রধান দিক ছিলো ৩ টি।

প্রথমতঃ সবাই তাওহীদের বা আল্লাহর সার্বভৌমত্বের দাওয়াত দিয়েছেন এবং গায়রুল্লাহর সার্বভৌমত্ব পরিহার করার আহ্বান রেখেছেন।

দ্বিতীয়তঃ তাঁরা সমাজের খুঁটিনাটি সমস্যা সমাধানের প্রসঙ্গ না তুলে বড় বড় সমস্যার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন।

তৃতীয়তঃ দাওয়াত কবুল না করলে দুনিয়া ও আখেরাতের কঠিন পরিণতির ভীতি প্রদর্শন এবং দাওয়াত কবুলের প্রতিদান-প্রতিফল দুনিয়া ও আখেরাতে কি হবে সে সম্পর্কেও শুভ সংবাদ শুনানো হয়েছে।

শাহাদাত আ’লান্নাসঃ শাহাদাত মূলত দাওয়াতেরই একটা বাস্তব রূপ। জীবন্ত নমুনা পেশ করার মাধ্যমেই যুগে যুগে নবী রাসূলগণ তাদের দাওয়াতকে মানুষের সামনে বোধগম্য ও অনুসরণযোগ্য বানানোর চেষ্টা করেছেন। তাঁরা সবাই এই সাক্ষ্য দুই উপায়ে প্রদান করেছেন।

এক: তারা আল্লাহর দ্বীনের পক্ষে বক্তব্য রেখেছেন। এটা মৌখিক সাক্ষ্য।

দুই: মৌখিক সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তাদের আমল আখলাক গড়ে তুলেছেন। এটা বাস্তব সাক্ষ্য। কিতাল ফি সাবিলিল্লাহঃ- ইসলামী আন্দোলনের বিরোধিতা ও জুলুম নির্যাতন অবশ্যম্ভাবী। তাই, ইসলামী আন্দোলনে জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহর কাজে এই সংঘাত ও সংঘর্ষ অনিবার্য। জিহাদের একটি পর্যায় হচ্ছে কিতাল বা যুদ্ধ। এই কিতালের নির্দেশ মূলত দ্বীন ইসলামকে পরিপূর্ণরূপে বিজয়ী আদর্শরূপে প্রতিষ্ঠা করা এবং মানুষের সমাজ থেকে অশান্তির কারণ যাবতীয় ফেতনা ফাসাদের মূলোৎপাটন করার
জন্যেই।

ইকামাতে দ্বীনঃ- ইকামাতে দ্বীন অর্থ দ্বীন কায়েমের প্রচেষ্টা। আর দ্বীন কায়েম বলতে বুঝায় কোন একটা জনপদে দ্বীন ইসলাম বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। অর্থাৎ, রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করা। এভাবে দ্বীন কায়েমের চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালানোটাই ইসলামী আন্দোলনের জাগতিক লক্ষ্য। আর এরই মাধ্যমে অর্জিত হয় পারলৌকিকলক্ষ্য অর্থাৎ নাজাত ও আল্লাহর সন্তুষ্টি।

* আমর বিল মা’রূফ ও নেহী আনিল মুনকারঃ- সৎকাজের আদেশ প্রদান ও অসৎকাজে বাধা দানের কাজটা বিভিন্ন পর্যায়ে আঞ্জাম দেয়া যায়:

এক: সাধারণভাবে গোটা উম্মতে মুহাম্মদীরই এটি দায়িত্ব।

দুই. সরকারী প্রশাসনের মাধ্যমে এই কাজের আঞ্জাম পাওয়াটাই শরীয়তের আসল স্পিরিট। ইসলামী সরকারের গোটা প্রশাসন যন্ত্রই এই কাজে ব্যবহৃত হবে।

দ্বিতীয় অধ্যায়ঃ

ইসলামী আন্দোলনের শরয়ী মর্যাদাঃ পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন যে ফরজ এতে আর কোন সন্দেহের অবকাশ থাকে না।
ফরজের ক্ষেত্রে ফরজে আইন ও কেফায়ার বিতর্ক তোলার ও কোন সঙ্গত কারন নেই। ফরজে কেফায়া ফরজই এবং যে কোন নফল ও সুন্নাত কাজের তুলনায় বহুগুণে উত্তম ও অনেক বেশী মর্যাদাসম্পন্ন কাজ। ইসলামী আন্দোলন নিছক কোন রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এই যুগের কোন নতুন আবিষ্কার ও নয়। বরং, সমস্ত নবী রাসূলগনের তরিকা অনুসরণ করতে হলে উম্মতে মুহাম্মদীর হক আদায় করতে হলে, ঈমানের দাবী পূরণ করতে হলে, সর্বোপুরি আখেরাতে নাজাতের পথে চলতে হলে ইসলামী আন্দোলনে যোগদান ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই।

১. ইসলামী আন্দোলনের কাজ আল্লাহর কাজঃ- মানুষের জীবনে ও আল্লাহর যমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজটা মূলত আল্লাহরই কাজ। সৃষ্টির সর্বত্র আল্লাহর হুকুম আল্লাহ নিজেই সরাসরি কার্যকর করেছেন। মানুষের সমাজেও তারই হুকুম চলুক এটাই তার ইচ্ছা। এখানে ব্যতিক্রম এতটুকু যে, মানূষকে সীমিত অর্থে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। যখন মানুষ তার স্বাধীন ইচ্ছাকে আল্লাহর ইচ্ছার সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে, দ্বীন কায়েমের আন্দোলনে নিয়োজিত করে। আল্লাহ তাদেরকে আনসারুল্লাহ- আল্লাহর সাহায্যকারী হিসেবে মর্যাদা দান করেন।

২. এ কাজে শরীক হওয়ার জন্যেও আল্লাহর অনুমোদন প্রয়োজনঃ-
ইসলামী আন্দোলনের কাজটা আল্লাহর কাজ। সুতরাং এই কাজে শরীক হতে পারাটাও আল্লাহর অনুমোদন সাপেক্ষ। অবশ্য যারাই নিষ্ঠার সাথে এই পথে চলার সিদ্ধান্ত নেয়, আল্লাহ তাদের সিদ্ধান্ত কে কবুল করেন।

৩. ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্যে একটি সতর্কবাণীঃ-
আল্লাহর এই মেহেরবানীর দাবী হলো, আল্লাহর প্রতি আরও বেশী বেশী কৃতজ্ঞ হওয়া, আল্লাহর এই মেহেরবানীর পূর্ণ সদ্ব্যবহারের আপ্রাণ চেষ্টা চালানো। নিজের যোগ্যতা প্রতিভার সবটুকু এই কাজে লাগিয়ে দেয়া। এই দায়িত্ব পালনে গভীর আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা দেখাতে হবে। সুবিধাবাদী মনোভাব ও আচরণ থেকে ব্যক্তি ও সমষ্টিকে মুক্ত রাখার সযত্ন প্রচেষ্টা চালাতে হবে। অন্যথায় এই সৌভাগ্য দুর্ভাগ্যে পরিণত হবে। দুনিয়াতেও লাঞ্ছনা পোহাতে হবে। আখেরাতেও কঠোরতম
শাস্তি ভোগ করতে হবে।

তৃতীয় অধ্যায়ঃ

ইসলামী আন্দোলনের সাফল্যঃ- আন্দোলনের চূড়ান্ত ফলাফল, সফলতা ও ব্যর্থতার ক্ষেত্রে ও অনৈসলামিক আন্দোলন ও ইসলামী আন্দোলনের মধ্যে রয়েছে আকাশ পাতাল পার্থক্য।

ইসলামী আন্দোলনের সাফল্যের দিক ২ টি।

১. আখিরাতের সাফল্যঃআল্লাহর সন্তোষ অর্জন, গুনাহ মাফ এবং নিয়ামতপূর্ণ জান্নাত লাভ।
২. দুনিয়াবি সাফল্যঃ তাগুতি শক্তির পরাজয়, খেলাফত লাভ, ভয়-ভীতি দুর হওয়া, জান-মাল-ইজ্জতের নিরাপত্তা লাভ ইত্যাদি। খেলাফত লাভ বা দুনিয়াবী সাফল্যের জন্য শর্ত
২ টি। যথাঃ-

১. আল্লাহর দ্বীনের ভিত্তিতে মানুষের সমাজ পরিচালনার উপযুক্ত একদল লোক তৈরি।
২. দেশের, সমাজের মানুষের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মানুষেরর সমর্থন।

ইসলামী আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতিঃ-
১. কাঙ্ক্ষিত মানের নেতৃত্ব তৈরি ও অধিকাংশ জনসমর্থন লাভ হলে ইসলাম বিজয়ী হবে।
২. কাঙ্ক্ষিত মানের নেতৃত্ব তৈরির পর জনসমর্থন না পেলে নির্যাতন আসবে।
নির্যাতনের ধরণ ৩টি। যথাঃ-
১.তাদের সবাইকে না হলেও উল্লেখযোগ্য অংশকে শহীদ করা হবে। ২.তারা দেশ থেকে বহিষ্কৃত হবে, অথবা, ৩.দেশের মধ্যেই আষ্টেপৃষ্ঠে বাধা থাকবে।

জাগতিক সাফল্যের কোরআনিক শর্তাবলীঃ-
১. আল্লাহ এবং তার রাসূলই বিজয়ী হবেন, আল্লাহর এই ঘোষনার প্রতি পাকাপোক্ত একীন পোষন করতে হবে।
২. আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের দুশমনী করে এমন লোক পরম আপনজন, নিকটাত্মীয় হলে ও তাদের সাথে ভালবাসা ও বন্ধুত্বের সম্পর্ক রাখা যাবে না।
৩. পরীক্ষালব্ধ খাঁটি ঈমানের অধিকারী হতে হবে।
৪. আল্লাহ প্রদত্ত রূহানী শক্তির বলে বলীয়ন হতে হবে।
৫. আল্লাহর রেজামন্দী লাভে সক্ষম হতে হবে।
৬. আল্লাহর যাবতীয় ফয়সালা খুশিমনে ও দ্বিধাহীন চিত্তে গ্রহণ করার মত মন মানসিকতার অধিকারী হতে হবে।

চতুর্থ অধ্যায়ঃ ইসলামী সংগঠন
* সংগঠনের অর্থ ও সংজ্ঞাঃ-

সংগঠন শব্দটির ইংরেজী প্রতিশব্দ Organisation যার শাব্দিক অর্থ বিভিন্ন Organ কে একত্রিত করণ, গ্রন্থায়ন ও একীভূতকরণ বা আত্মীকরণ। ইসলামের সঠিক আকিদা বিশ্বাসের ভিত্তিতে দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতে মুক্তির উদ্দেশ্যে আল্লাহর যমীনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত কিছু সংখ্যক লোকের সম্মিলিত ও সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টার নাম ইসলামী আন্দোলন, আর এর সামষ্টিক রূপ ও কাঠামোর প্রক্রিয়ার নাম ইসলামী সংগঠন।

* সংগঠনের উপাদান ৪ টি। যথাঃ-
(১) আদর্শ, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য, কর্মসূচি ও কর্মপদ্ধতি
(২) নেতৃত্ব
(৩) কর্মীবাহিনী
(৪) কর্মক্ষেত্র।

* ইসলামী সংগঠনের প্রকৃত মডেলঃ-
শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ (স.) প্রতিষ্ঠিত ইসলামই ‘জামায়াতে ইসলামী ’ সংগঠনের প্রকৃত মডেল। একইভাবে মুহাম্মদ (স.) এর নেতৃত্বই ইসলামী নেতৃত্বের একমাত্র মডেল। মুহাম্মদ (স.) -এর পরবর্তী মডেল হলো খোলাফায়ে রাশেদীন পরিচালিত ইসলামী জামায়াত। এরপর আর কোন মডেল নেই।

* ইসলামী সংগঠনের কার্যক্রম ও শরয়ী মর্যাদাঃ-

– ইসলামী সংগঠন ইসলামী আন্দোলনের জন্যেই ফরজ।
– দাওয়াত ইলাল্লাহ ও শাহাদাতে হকের দায়িত্ব পালন।
– জনশক্তিকে পরিকল্পিতভাবে এর যোগ্য করে গড়ে তোলা।
– বিরোধী শক্তির যথার্থ মূল্যায়ন করে তার মোকাবিলার উপায় উদ্ভাবন।
– দ্বীনকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে ধাপে ধাপে অগ্রসর হওয়া।
– বিজয়ী হলে গোটা জনমানুষের মধ্যে আমর বিল মা’রূফ ও নেহী আনিল মুনকারের দায়িত্ব আঞ্জাম দেওয়া।

* ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্বের শরয়ী মর্যাদাঃ-
– হাদিসে রাসূলের আলোকে ইসলামী রাষ্ট্র প্রধানের আনুগত্য রাসূলের আনুগত্যেরই শামিল।
– এই সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নায়েবে রাসূলের মর্যাদার অধিকারী।

* ইসলামী সংগঠনের সিদ্ধান্ত সমূহের শরয়ী মর্যাদাঃ-

কোন সিদ্ধান্ত কারও জানামতে কোরআন ও সুন্নাহর আদর্শের পরিপন্থী বলে মনে না হলে সেই সিদ্ধান্তকে কোরআন ও সুন্নাহর নির্দেশেরই মর্যাদা দিতে হবে।

* আদর্শভিত্তিক ও গণমুখী নেতৃত্বের গুরুত্বঃ-
– ইসলামী আদর্শ স্বয়ং একটি গণমুখী আদর্শ।
– ইসলামী আন্দোলনের বক্তব্য মজলুম ও ভুক্তভোগী জনমানুষের সুপ্ত ও অব্যক্ত ব্যথা বেদনারই অভিব্যক্তি।
– পরিপূর্ণ আদর্শবাদী চরিত্র নিয়ে চলার সাথে সাথে গণমূখী ভূমিকাও পালন করতে হবে।

* নেতৃত্বের গুরুত্বঃ-

– সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রমে নেতৃত্বের ভূমিকা প্রধান।
– ইমাম বা নেতা ঢালস্বরূপ, যাকে সামনে রেখে লড়াই করা যায় এবং আত্মরক্ষা করা যায়। (আল হাদিস)

* ইসলামী নেতৃত্বের সংজ্ঞাঃ-
ইসলামী নেতৃত্ব তিনটি শব্দের মর্মার্থের ধারক-
বাহক-
১.খলীফাঃ খলিফা অর্থ প্রতিনিধি। মানুষ মাত্রই আল্লাহর প্রতিনিধি বা খলিফা।
২.ইমামঃ যিনি সামনে থেকে অপরকে পরিচালনা করেন তাকেই ইমাম বলা হয়।
৩. আমীরঃ
– আমর বা আদেশ যার পক্ষ থেকে আসে সে-ই আমীর বা উলিল আমর।
– আমীরের কাজ হবে আল্লাহ ও রাসূলের আদেশ -নিষেধের ভিত্তিতে মুসলিম উম্মতকে পরিচালনা করা।

* ইসলামী নেতৃত্বে প্রক্রিয়াঃ-
নেতৃত্ব নির্বাচনের মানদন্ড ২ টি।
১. আদর্শের মানে বেশী অগ্রসর।
২. এই অগ্রণী ভূমিকার স্বাভাবিক এবং স্বতঃস্ফূত স্বীকৃতি।
* সূরা তাওবার শেষ আয়াতটির আলোকে রাসূলের
পরিচয়ঃ-
(১)মানুষের দুঃখ-কষ্ট তিনি হৃদয় দিয়ে অনুভব করেন।
(২) মানুষের কল্যাণই তাঁর বড় আগ্রহের ব্যাপার, কারণ তিনি রহমাতুল্লিল আলামীন।
(৩) মুমিনের প্রতি বিশেষভাবে তিনি দয়াপরবশ এবং দরদী মনের অধিকারী।
(৪) দৃঢ় সংকল্প।

* হাদিসে রাসূলের আলোকে নেতৃত্বের
গুণাবলীঃ-
(১) যাকে হুকুম দেবে বা নিষেধ করবে, তার প্রতি দরদী, সংবেদনশীল হতে হবে।
(২) যে ব্যাপারে নিষেধ করবে সে বিষয়ে যথেষ্ট জ্ঞানের অধিকারী হবে। (৩) যে ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করবে, সেক্ষেত্রে
পরিপূর্ণ ইনসাফ করতে সক্ষম হতে হবে।
(দায়লামী, মিনহাজুস সালেহীন)

* ঐ বাঞ্ছিত গুণাবলী অর্জনের উপায়ঃ-
১.দ্বিধা সংকোচ ও জড়তা কাটিয়ে দায়িত্ব পালন।
২.মানব জাতিকে খোদাহীন সমাজ, ব্যবস্থা, সভ্যতা-সংস্কৃতির পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করার
কাজে আত্মনিয়োগ।
৩.আল্লাহর সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে বর্তমান অবস্থা পরিবর্তনের আহবান জানানো।
৪. আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব গঠন।
৫. আল্লাহর অপছন্দনীয় সব কাজ বর্জন।
৬. সৃষ্টি জগতে কারও কাছে প্রতিদানের আশা না করা।
৭. রবের জন্যে ধৈর্য ধারণ করবে।

* নেতৃত্বের মৌলিক দায়িত্বঃ-

১.তেলাওয়াতে আয়াত
২. আল্লাহর কিতাবের তালিম
৩. হিকমতের তালিম
৪. তাজকিয়ায়ে নফস।

* নেতা ও কর্মীর সম্পর্কঃ-
– ইসলামী সংগঠনের নেতা ও কর্মীর সম্পর্ক অফিসার ও কর্মচারীদের সম্পর্ক নয়।
– এই সম্পর্ক ভ্রাতৃত্বের।
– নেতা কর্মীকে ভ্রাতৃত্বের দাবী নিয়ে, দরদ নিয়ে, আবেগ অনুভূতি নিয়ে পরিচালনা করবে।
– কর্মী নেতাকে ভ্রাতৃতুল্য ভক্তি শ্রদ্ধাসহ গ্রহন করবে।

পঞ্চম অধ্যায়ঃ আনুগত্যঃ-
* আনুগত্য কাকে বলে?
আনুগত্য অর্থ মান্য করা, মেনে চলা, আদেশ ও নিষেধ পালন করা, উপরন্তু কোন কর্তৃপক্ষের ফরমান-ফরমায়েশ অনুযায়ী কাজ করা প্রভৃতি।
– আল্লাহর আনুগত্য রাসূলের মাধ্যমে। – আর আল্লাহর ও রাসূল উভয়ের আনুগত্য উলিল আমর বা আমীরের মাধ্যমে।
– আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য শর্তহীন এবং নিরঙ্কুশ।
– উলিল আমর বা আমীরের আনুগত্য শর্ত সাপেক্ষ এবং আল্লাহ ও রাসূল প্রদত্ত সীমারেখার মধ্যে সীমিত।

* ইসলামের সাথে আনুগত্যের সম্পর্কঃ-
– ইসলাম ও আনুগত্য অর্থের দিক দিয়ে এক ও অভিন্ন,
– তেমনি দ্বীন এবং এতায়াতও অর্থের দিক দিয়ে একটা অপরটার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
– ইসলামের শাব্দিক অর্থ আনুগত্য বা আত্মসমর্পণ করা,
– এতায়াত শব্দের অর্থও আনুগত্য বা আত্মসমর্পণ করা।
– ইসলামই আনুগত্য অথবা আনুগত্যই ইসলাম।
* আনুগত্যের গুরুত্ব ও অপরিহার্যতাঃ-
– আনুগত্য করা আল্লাহর নির্দেশ।
– আল্লাহর প্রতি এবং আখেরাতের প্রতি ঈমানের অনিবার্য দাবী।
– দ্বিধাহীন নির্ভেজাল আনুগত্যই সাফল্যের চাবিকাঠি।

* আনুগত্যহীনতার পরিণামঃ-
– হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর
এবং রাসূলের অনুসরণ কর আর নিজেদের আমলবিনষ্ট করো না। (মুহাম্মদ: ৩৩)

* আনুগত্যের দাবীঃ-
-আনুগত্য হতে হবে ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে,
– পূর্ণ আন্তরিকতা ও নিষ্ঠাসহকারে,
– স্বতঃস্ফুর্ত প্রেরণা সহকারে।
– কোন প্রকারের কৃত্রিমতা বা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, সংকোচ- সংশয়ে থাকা যাবে না।

* আনুগত্যের পূর্বশর্তঃ-
– মনযোগ সহকারে শোনা।
– ভালভাবে বুঝা,
– কাজের গুরুত্ব অনুধাবন।
-আন্তরিকতা সহকারে বাস্তবায়ন।

* ওজর পেশ করা গুনাহঃ-
– যারা আল্লাহ এবং আখেরাতের প্রতি ঈমান পোষণ করে, তারা কখনো আল্লাহর পথে জানমাল দিয়ে জিহাদ করা থেকে আপনার কাছে অব্যাহতি চাইবেনা। (সূরা তওবা:৪৪)
– ওজর পেশের সঠিক পদ্ধতি হলো, ব্যক্তি নিজে এই ওজরের কারণে কাজ না করার ফায়সালা দেবে না। বরং শুধু সমস্যাটা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত যাই আসুক তাতেই কল্যাণ আছে, এই আস্থা রাখবে।

* আনুগত্যের পথে অন্তরায় কি কিঃ-
– আখেরাতের অনুভূতির অভাব এবং দুনিয়া পূজার মনোভাব।
– নিজ দায়িত্বের যথার্থ অনুভূতির অভাব।
– গর্ব, অহঙ্কার, আত্মপূজা,ও আত্মম্ভরিতা।
– হৃদয়ের বক্রতা, যা সাধারণত সৃষ্টি হয়ে থাকে দায়িত্ব এড়ানোর কৌশলস্বরূপ নানারূপ জটিল কুটিল প্রশ্ন সৃষ্টির মাধ্যম।
– অন্তরের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও সংশয়-সন্দেহের প্রবণতা।

* আনুগত্যের পরিবেশ সৃষ্টির রূহানী উপকরণঃ-
এক: ব্যক্তিগত ভাবে এবং সংগঠন পরিচালনার ক্ষেত্রে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য।
দুই: কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় বডির সিদ্ধান্তের প্রতি নিষ্ঠার সাথে শ্রদ্ধা পোষণ করবে। অত্যন্ত যত্ন সহকারে তা বাস্তবায়নের
প্রয়াস চালাবে। আর অধস্তন সংগঠনের নেতৃত্বের দায়িত্বে যারা থাকবে তাদের উর্ধ্বতন সংগঠনের, ঊর্ধ্বতন নেতার
আনুগত্যের ব্যাপারে আদর্শ স্থাপনের প্রয়াস পেতে হবে।
তিন: সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীর জন্য আল্লাহর দরবারে হাত তুলে দোয়া করা অভ্যাসে পরিণত হতে হবে।

ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ পরামর্শঃ-
– পরমার্শ দেয়া বা পরামর্শের ভিত্তিতে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা এতো জরুরী এবং
গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ –
প্রথমতঃ এটা আল্লাহর নির্দেশ। বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নাও, তাদের সাথে মতমত বিনিময় কর। (আলে ইমরান: ১৫৯)।
দ্বিতীয়তঃ মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজে আল্লাহর নির্দেশের আলোকে সাহাবায়ে কেরামের সাথে বিভিন্ন ব্যাপারে পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তৃতীয়তঃ গোটা সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) জামায়াত এর উপর আমল করেছেন।

* পরামর্শের গুরুত্ব সম্পর্কে কয়েকটি হাদীছঃ-
– যে ব্যক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ছাড়াই আমীর হিসেবে বাইয়াত গ্রহণ করবে, তাদের বাইয়াতও বৈধ হবে না (মুসনাদে আহমাদ)।
– যে পরামর্শ করে কাজ করে সে নিরাপদ থাকে।
(আবু দাউদ)
* পরামর্শ কারা দেবেঃ-
– পরামর্শের ক্ষেত্র ৩ টি।
১. সর্ব সাধারণের পরামর্শ
২. দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পরামর্শ
৩. আহলে রায় বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ।
– যে বিষয় যাদের সাথে সংশ্লিষ্ট অথবা যেখানে যাদের স্বার্থ ও অধিকার জড়িত, সেখানে তাদের সাথে আলোচনা বা পরামর্শ করতে হবে।
– বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ইস্যুতে সংগঠনের বিশেষজ্ঞদের রায়ের প্রতি আস্থা রাখা যেতে পারে।

* পরামর্শ কিভাবে দেবেঃ-
– ইসলামী সমাজে ও সংগঠনে পরামর্শ নিছক অধিকার মাত্র নয়। এটা একটা পবিত্র আমানত।
– আন্দোলনে ও সংগঠনের উন্নতি অগ্রগতি সম্পর্কে সবাইকে চিন্তুা ভাবনা করতে হবে।
– নিজের নিকটস্থ দায়িত্বশীলের কাছেই ব্যক্তকরতে হবে।
– দ্বীধাহীন চিত্বে পরামর্শ দিতে হবে।

সপ্তম অধ্যায়ঃ
সমালোচনা ও আত্ম-সমালোচনাঃ-
– ব্যক্তি গঠনের জন্যে আত্ম-সমালোচনা এবং সাংগঠনিক সুস্থতা, সংশোধন ও গতিশীলতার জন্যে গঠনমুলক সমালোচনার সুযোগ থাকা অপরিহার্য।
– এই আত্ম-সমালোচনা ও সমালোচনা ইসলামের একটা পরিভাষা হিসেবে ইহতেসাব এবং মুহাসাবা নামে
পরিচিত ।
– এহতেসাব ও মুহাসাবা দুটোরই অর্থ হিসাব নেয়া।
– ইহতেসাব- হিসাব আদয় করা। মুহাসাব- পরস্পরে একে অপরে হিসাব নেয়া।

* ইহতেসাব ও মুহাসাবার তিনটি পর্যায়ঃ-

১. ব্যক্তিগত ইহতেসাব বা আত্বসমালোচনা
২. সাথী ও বন্ধুদের একে অপরের মুহাসাবা
৩. সামষ্টিক কার্যক্রমের মুহাসাবা বা পর্যালোচনা।

* ব্যক্তিগত ইহতেসাব বা আত্মসমালোচনাঃ

-ব্যক্তিগত ইহতেসাবের ফলশ্রুতিতে ব্যক্তি নিজের ভুল-ত্রুটিকে বড় করে দেখতে অভ্যস্ত হয় এবং অপরের ভুল ত্রুটিকে সে
তুলনায় অনেক নগন্য মনে করে।
– নিজের ভাল কাজগুলোর পরিবর্তে অপরে ভাল কাজগুলোকে বড় করে দেখার মন মানসিকতার অধিকারী হয়।

* ব্যক্তিগত ইহতেসাবের পদ্ধতিঃ-

(১) আনুষ্ঠানিকভাবে দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নিজের সকল কর্মকাণ্ড স্মরণ করা। খারাপ কজের জন্য ক্ষমা চাওয়া, ভালো কজের জন্য শুকরিয়া আদায়।

২. স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেরআন এবং হাদীছ পড়ার মুহূর্তে, আত্মসমালোচনা বা আত্মজিজ্ঞাসার অভ্যাস গড়ে তোলা।

৩. বাস্তব কর্মক্ষেত্রে কোথাও কোন ভুলত্রুটি হয়ে গেলে সাথে সাথে তা শুধরানোর উদ্যোগ নেয়া।

* পারস্পরিক মুহাসাবাঃ-

– এক মুমিন আর এক মুমিনের ভাই, তারা পরস্পরে একে অপরের শক্তি যোগায়।
– দ্বীনের আসল দাবী শুভ কামনা- আল্লাহ ও রাসূলের মহব্বতের দাবীকে সামনে রেখে মুসলমানাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের এবং সর্বসাধারণের শুভকামনা করা।
– এই স্পিরিটকে সামনে রেখেই পরস্পরের ভুলত্রুটি শোধরানোর আন্তরিক প্রচেষ্টাই পারস্পরিক মুহাসাবা নামে অভিহিত।

* পারস্পরিক মুহাসাবার পর্যায় ৪টি।
(১) দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে কর্মীদের বা অধস্তন দায়িত্বশীলদের মুহাসাবা।
(২) কর্মীদের বা অধস্তন দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে কর্মীদের বা অধস্তন দায়িত্বশীলদে মুহাসবা।
(৩) কর্মীদের বা অধস্তন দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে উর্ধ্বতন দায়িত্বশীলদের মুহাসাবা।
(৪) কর্মীদের পরস্পরে এক অপরের মুহাসাবা।

* সাংগঠনিক কাজের মুহাসাবাঃ-
– সাংগঠনিক কাজে গতিশীলতা আনার জন্যে, সুস্থতার সাথে সংগঠন পরিচালনার জন্যে যেমন সর্বস্তরের জনশক্তির পরামর্শেল প্রয়োজন আছে, তেমনি সবার মুহাসাবাহার সুযোগও বাঞ্চনীয়।
– পরামর্শ যেমন যত্রতত্র, যেনতেন প্রকারের দেয়া ঠিক নয়। মুহাসাবাও তেমনি যত্রতত্র যেভাবে সেভাবে হতে পারে না।
-গঠনমূলক সমালোচনা যেমন আন্দোলকে জীবনীশক্তি দান করে থাকে- লাগমছাড়া সমালোচনা আবর তেমনই একটা সংগঠনের জন্যে আত্মঘাতী প্রমাণিত হয়ে থাকে।

* সাংগঠনিক মুহাসাবার উপায়ঃ-

– স্থানীয় সংগঠনের মুহাসাবা একদিকে উর্ধ্বতন সংগঠনের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। অপরদিকে এর সাথে সংশ্লিষ্ট জনশক্তির পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
– দ্বিধাহীন চিত্তে নিজের পরামর্শ দান করা।
– নিজের মূল্যায়ন বা পর্যালোচনাকেই সে একমাত্র নির্ভূল বা সঠিক পর্যালোচনা বা মূল্যায়ন মনে না করা।
– সামষ্টিক পর্যালোচনা ও মূল্যায়নকে দ্বিধাহীন চিত্তে গ্রহণ করার জন্যে তাকে সর্বাবস্থায় প্রস্তুত থাকা।