মহানগরী গঠন ও কাজ
১। আমীরে জামায়াত বিশেষ প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সহিত পরামর্শ করিয়া সাংগঠনিক মহানগরীর সীমা নির্ধারণ করিতে পারিবেন।
২। মহানগরী সদস্য সম্মেলন, মহানগরী আমীর, মহানগরী মজলিসে শূরা এবং মহানগরী কর্মপরিষদ সমন্বয়ে মহানগরী জামায়াত গঠিত হইবে।
৩।মহানগরী জামায়াত কেন্দ্রীয় জামায়াতের অধীনে হইবে এবং উহার সহিত সরাসরি সম্পর্ক রক্ষা করিয়া চলিবে।
মহানগরী মজলিসে শূরা
১। প্রত্যেক মহানগরীতে মজলিসে শূরা থাকিবে।
২। মহানগরীর বিদায়ী মজলিসে শূরা প্রত্যেক নির্বাচনের পূর্বে পরবর্তী মজলিসে শূরায় মহানগরী সদস্য (রুকন) গণের প্রতিনিধিত্বের আনুপাতিকহার নির্ধারণ করিবে।
৩। মহানগরী মজলিসে শূরা নিম্নরূপে গঠিত হইবে।
(ক) মহানগরীর বিদায়ী মজলিসে শূরা কর্তৃক নির্ধারিত জামায়াত সদস্য (রুকন) গণের প্রতিনিধিত্বের আনুপাতিকহার মোতাবিক শূরা সদস্য নির্বাচন করিবেন। কিন্তু কোন উপজেলা/থানা প্রতিনিধিত্ব হইতে বঞ্চিত হইবেনা।
(খ) মজলিসে শূরার নির্বাচিত সদস্যগণ দ্বিতীয় পর্যায়ে জেলার সদস্যগণের (রুকনগণের) মধ্য হইতে নির্বাচিত শূরা সদস্যগণের এক পঞ্চমাংশ, মজলিস সদস্য নির্বাচিত করিবেন।
(গ) বিদায়ী মজলিসে শূরা কর্তৃক নির্ধারিত হারে জেলা/মহানগরী ইউনিটের প্রতিনিধিত্ব থাকিবে।
১। মহানগরী মজলিসে শূরার কার্যকাল হইবে দুই বৎসর।
২। মহানগরী আমীর পদাধিকার বলে মহানগরী মজলিসে শূরার সভাপতি হইবেন।
৩।মহানগরী নায়েবে আমীর ও মহানগরী সেক্রেটারী (যদি মজলিসে শূরার সদস্য না হইয়া থাকেন) পদাধিকার বলে মহানগরী মজলিসে শূরার সদস্য হইবেন।
৪। মজলিসে শূরার সদস্য নন মহানগরী কর্মপরিষদের এমন সদস্যগণ পদাধিকার বলে মহানগরী মজলিসে শূরার সদস্য হইবেন।
৫। মহানগরী আমীর মহানগরী মজলিসে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক সদস্যকে (রুকন) জেলা/মহানগরী মজলিসে শূরায় মনোনীত করিতে পারিবেন, যাহাদের মোট সংখ্যা জেলা/মহানগরী মজলিসে শূরার নির্বাচিত সদস্যগণের এক-পঞ্চমাংশের অধিক হইবে না।
৬। মহানগরী মহিলা মজলিসে শূরার সদস্যগণ জেলা/মহানগরী মজলিসে শূরার সদস্য হইবেন।
৭। মহানগরী মজলিসে শূরার কোন আসন শূন্য হইলে দুই মাসের মধ্যে উহা পূরণ করিবেন।
মহানগরী মজলিসে শূরার অধিবেশন
১। মহানগরী মজলিসে শূরার নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার এক মাসের মধ্যেই জেলা/মহানগরী আমীর নির্বাচিত মজলিসের উদ্বোধনী অধিবেশন আহ্বান করিবেন এবং এই অধিবেশনে মজলিসের প্রত্যেক সদস্য জেলা/ মহানগরী আমীরের সম্মুখে শপথ গ্রহণ করিবেন।
২। মহানগরী মজলিসে শূরার সাধারণ অধিবেশন বৎসরে কমপক্ষে তিনটি হইবে।
৩। মহানগরী মজলিসে শূরার জরুরী অধিবেশন নিম্নলিখিত অবস্থায় যে কোন সময় আহ্বান করা যাইবেঃ
(ক) মহানগরী আমীর ইহার প্রয়োজনবোধ করিলে, অথবা
(খ) মহানগরী মজলিসে শূরার এক-তৃতীয়াংশ সদস্য লিখিতভাবে দাবী জানাইলে, অথবা
(গ) আমীরে জামায়াত ইহা অনুষ্ঠানের নির্দেশ দিলে।
৪।মহানগরী মজলিসে শূরার মোট সদস্য সংখ্যার এক-তৃতীয়াংশের উপস্থিতিতে অধিবেশনের কোরাম হইবে।
মহানগরী মজলিসে শূরার কর্তব্য ও ক্ষমতা
১। কর্তব্য
সামষ্টিকভাবে মহানগরী মজলিসে শূরা এবং ব্যক্তিগতভাবে উহার প্রত্যেক সদস্যের কর্তব্য নিম্নরূপ হইবেঃ
(ক) আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আনুগত্য ও আদেশ পালনকে সবকিছুর উপরে গুরুত্ব প্রদান করা।
(খ) মজলিসে শূরার অধিবেশনসমূহে নিয়মিত যোগদান করা।
(গ) প্রত্যেক বিষয়ে নিজের ইলম, ঈমান ও বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী স্বীয় প্রকৃত মত স্পষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা।
(ঘ) জামায়াত ও উহার কাজে যেখানে যতটুকু দোষ-ত্র“টি অনুভূত হইবে তাহা দূর করিবার চেষ্টা করা।
২। ক্ষমতা
মহানগরী মজলিসে শূরার ক্ষমতা নিম্নরূপ হইবে ঃ
(ক) মহানগরী নায়েবে আমীর, জেলা/মহানগরী সেক্রেটারী ও বিভাগীয় সেক্রেটারীগণের নিয়োগ ও অব্যাহতির ব্যাপারে জেলা/ মহানগরী আমীরকে পরামর্শ দান।
(খ) মহানগরী ও অধঃস্তন সংগঠনসমূহের কাজ তদারক ও নিয়ন্ত্রণ।
(গ) মহানগরীর সার্বিক পরিকল্পনা ও বাজেট অনুমোদন।
(ঘ) মহানগরী ও অধঃস্তন সংগঠনগুলির বাইতুলমালের হিসাব পরীক্ষা।
(ঙ) মহানগরীর দায়িত্বশীলদের দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ ও পর্যালোচনা
(চ) মহানগরী নির্বাচন কমিশন গঠন।
মহানগরী কর্মপরিষদ
১। কেন্দ্রীয় সংগঠন ও মহানগরী মজলিসে শূরার সিদ্ধান্তসমূহ
বাস্তবায়নের জন্য মহানগরী নায়েবে আমীর (যদি থাকেন), মহানগরী সেক্রেটারী ও প্রয়োজনীয় সংখ্যক বিভাগীয় সেক্রেটারী ও সদস্য সমন্বয়ে মহানগরী কর্মপরিষদ গঠিত হইবে।
২। মহানগরী মজলিসে শূরার প্রত্যেক নির্বাচনের পর মজলিসে শূরার সদস্যগণ মহানগরী কর্মপরিষদ নির্বাচন করিবেন।
৩। মহানগরী মহিলা কর্মপরিষদ সদস্যগণ মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য হইবেন।
৪। কর্মপরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার পর কর্মপরিষদের প্রত্যেক সদস্য মহানগরী আমীরের নিকট শপথ গ্রহণ করিবেন।
৫। সামষ্টিকভাবে মহানগরী কর্মপরিষদ এবং ব্যক্তিগতভাবে ইহার সদস্যগণ মহানগরী আমীর ও মহানগরী শূরার নিকট দায়ী থাকিবেন।
৬। যদি কোন কারণে মহানগরী মজিলসে শূরার অধিবেশন আহ্বান করা অসম্ভব হইয়া পড়ে তখন মহানগরী মজলিসে শূরার পরিবর্তে মহানগরী কর্মপরিষদ গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতে পারিবে।
৭। মহানগরী ও অধস্তন সংগঠন সমূহের কাজ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ।
মহানগরী আমীরের নির্বাচন ও অব্যাহতি
১। মহানগরী সদস্যদের (রুকনগণের) ভোটে জেলা/মহানগরী আমীর দুই বছরের জন্য নির্বাচিত হইবেন।
২। মহানগরী আমীর স্বীয় পদের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে আমীরে জামায়াত বা তাঁহার প্রতিনিধির সম্মুখে শপথ গ্রহণ করিবেন।
৩। মহানগরী আমীর যদি সদস্য পদের যোগ্যতা হারাইয়া ফেলেন, অথবা সংগঠনের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন, অথবা মহানগরীর অধিকাংশ সদস্যের আস্থা হারাইয়া ফেলেন, তাহা হইলে আমীরে জামায়াত কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের পরামর্শক্রমে তাঁহাকে অব্যাহতি প্রদান করিবেন।
মহানগরী আমীরের কর্তব্য
মহানগরী আমীর স্বীয় মহানগরীতে সাংগঠনিক নিয়ম-শৃঙ্খলার জন্য দায়িত্বশীল হইবেন এবং তাঁহার কর্তব্য নিম্নরূপ হইবেঃ
১। জামায়াতের দাওয়াত, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য এবং কর্মসূচিকে স্বীয় এলাকায় প্রচার ও তাহা বাস্তবায়িত করিবার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২। কেন্দ্রীয় জামায়াতের নির্দেশসমূহ পালন এবং উহার বাজেটে ধার্য অর্থ যথাসময়ে পরিশোধ করিবার ব্যবস্থা করা।
৩। স্বীয় এলাকার অবস্থা ও জামায়াতের কাজ-কর্ম সম্পর্কে কেন্দ্রীয় জামায়াতকে অবহিত করা।
৪। স্বীয় এলাকায় অধঃস্তন জামায়াতসমূহ ও বিভিন্ন দায়িত্বশীলগণকে পরিচালনা করা, তদারক করা এবং তাঁহাদের নিকট হইতে কাজ বুঝিয়া লওয়া।
৫। স্বীয় এলাকায় জামায়াতের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য-সংশ্লিষ্ট কিংবা উহার উপর প্রভাব বিস্তারকারী বিষয়াদির যথাসময়ে খবর লওয়া ও সেই সম্পর্কে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৬। স্বীয় জেলার সদস্যগণের (রুকনগণের) তদারক ও মানোন্নয়নের সার্বিক প্রচেষ্টা চালানো।
৭। এতদ্ব্যতীত অতিরিক্ত যেইসব কর্তব্য ও দায়িত্ব কেন্দ্রীয় জামায়াত হইতে অর্পণ করা হইবে তাহা পালন করা।
মহানগরী আমীরের ক্ষমতা
মহানগরী আমীরের ক্ষমতা নিম্নরূপ হইবেঃ
১।মহানগরী আমীর মহানগরী মজলিসে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া আমীরে জামায়াতের সম্মতিক্রমে জেলা/মহানগরী নায়েবে আমীর নিয়োগ করিতে পারিবেন।
২। মহানগরী মজলিসে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া মহানগরীর সেক্রেটারী এবং বিভাগীয় সেক্রেটারী নিয়োগ ও অব্যাহতি প্রদান করিবেন।
৩। মহানগরী দপ্তরে কর্মচারী নিয়োগ ও অব্যাহতি প্রদান করিতে পারিবেন।
৪। মহানগরী মজলিসে শূরা ও সদস্য (রুকন) বৈঠক আহ্বান করিবেন।
৫। মহানগরী মজলিসে শূরা কর্তৃক গৃহীত বাজেট অনুযায়ী বাইতুলমাল হইতে অর্থ ব্যয় এবং নিজের কর্তব্য পালনের ব্যাপারে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
৬। এতদ্ব্যতীত আমীরে জামায়াত কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারিবেন।
মহানগরী আমীর ও মহানগরী মজলিসে শূরার সম্পর্ক
১। মহানগরী মজলিসে শূরা গঠিত হইলে মহানগরী আমীর সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মহানগরী মজলিসে শূরার সহিত পরামর্শ করিয়া সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।
২। দৈনন্দিন কার্য সম্পাদন এবং মজলিসে শূরার সিদ্ধান্ত নাই এমন কোন বিষয়েমহানগরী আমীর মহানগরী মজলিসে শূরার পরবর্তী প্রথম অধিবেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে জেলা/মহানগরী কর্মপরিষদের সহিত পরামর্শ করিয়া জরুরী ও সাময়িক পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে পারিবেন।
৩। কোন বিষয়ে মহানগরী আমীর ও মহানগরী মজলিসে শূরার মধ্যে মতানৈক্য দেখা দিলে বিষয়টি মহানগরী সদস্য (রুকন) সম্মেলনে পেশ করিতে হইবে। সেখানে কোন মীমাংসা না হইলে উহা আমীরে জামায়াতের নিকট পেশ করিবেন।
মহানগরী নায়েবে আমীর
মহানগরী আমীর, মহানগরী মজলিসে শূরার পরামর্শ ও আমীরে জামায়াতের অনুমোদনক্রমে মহানগরী নায়েবে আমীর নিয়োগ করিতে পারিবেন।
মহানগরী সেক্রেটারী
১। মহানগরী আমীর স্বীয় মজলিসে শূরার সাথে পরামর্শ করিয়া মহানগরী সেক্রেটারী নিয়োগ করিবেন।
২।মহানগরী সেক্রেটারী স্বীয় পদের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্বে মহানগরী আমীরের সম্মুখে শপথ গ্রহণ করিবেন।
৩। মহানগরী সেক্রেটারী ততক্ষণ পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকিবেন যতক্ষণ পর্যন্ত মহানগরী আমীর তাঁহার কাজ-কর্ম সন্তোষজনক বলিয়া বিবেচনা করিবেন।
৪। মহানগরী সেক্রেটারী স্বীয় মহানগরী যাবতীয় কাজ-কর্মে মহানগরী আমীরের সাহায্যকারী ও প্রতিনিধি হইবেন এবং সেই সব কর্তব্য পালন করিবেন যাহা মহানগরী আমীর তাঁহার উপর ন্যস্ত করিবেন।
৫। মহানগরী সেক্রেটারী তাঁহার কাজের জন্য মহানগরী আমীরের নিকট দায়ী থাকিবেন।