শান্তিপূর্ণ গণমিছিলে পুলিশের বাধা দান ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি এবং ১০-দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র ঘোষিত ঢাকা মহানগরীতে গণমিছিলের কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন করায় নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের বাধা দান ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ৩০ ডিসেম্বর নিম্নোক্ত বিবৃতি দিয়েছেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্র ঘোষিত ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করায় আমি নগরবাসীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ পৃথক পৃথকভাবে গণমিছিলের আয়োজন করে। পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ এই মিছিলে সরকার বাধা দিয়ে গণতান্ত্রিক অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেছে।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, আমরা শুরু থেকে বলে আসছি, জামায়াত নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাসী। কোটি কোটি মানুষের প্রিয় সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে একদিকে সংবিধানকে অবজ্ঞা করা হয়েছে, অন্যদিকে কোটি কোটি মানুষের অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিল শুরু হওয়ার পর কিছু অতি উসৎসাহী পুলিশ বাধা দেয় এবং মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে। পুলিশের উস্কানী সত্তে¡ও জামায়াত শান্তিপূর্ণভাবে গণমিছিলের কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ হল জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার বাস্তবায়নে সহযোগিতা করা। কিন্তু তা না করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বাধা সৃষ্টি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে এবং সংঘাতের পরিবেশ তৈরি করছে এবং জামায়াত হামলা করেছে বলে মিথ্যা অপবাদ রচনা করছে। জামায়াত কখনো হামলা সংঘাতের রাজনীতি করে না।
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জামায়াত একটি বৈধ গণতান্ত্রিক-নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদ ব্যতীত প্রত্যেক জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত অংশগ্রহণ করে এবং প্রত্যেক সংসদেই জামায়াতের প্রতিনিধিত্ব ছিল। প্রত্যেক আসনেই জামায়াত প্রার্থীগণ লক্ষাধিক ভোট পেয়েছেন। কোটি কোটি মানুষের সমর্থন যে দলের সঙ্গে রয়েছে, সে দলটিকে কথা বলতে দেয়া হবে না, এটা কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ হতে পারে না। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে শক্তি প্রয়োগ করে থামিয়ে দেয়া যায় না। জামায়াত নিয়মতান্ত্রিকভাবেই তার সকল কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে এবং ভবিষ্যতেও শান্তিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তা জামায়াত মিছিল বের করলেই বাধা দিয়ে জামায়াত হামলা করেছে মর্মে প্রচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার যে অপকৌশল গ্রহণ করেছেন, তা জনগণ বিশ্বাস করে না। এই ভূমিকা থেকে বিরত থাকার জন্য আমি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহŸান জানাচ্ছি।
আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সকল নাগরিকেরই সভা-সমাবেশ ও মিছিল করার অধিকার আছে। এই অধিকারে হস্তক্ষেপ করে আপনারা জনগণ ও সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিবেন না। আমরা অবিলম্বে জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ডা. শফিকুর রহমানসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি। সেই সাথে জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত ১০-দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।