মুজাহিদের পরামর্শেই আলবদর গঠন, নথি মিলল রাজশাহীতে” শিরোনামে অসত্য প্রতিবেদনের নিন্দা ও প্রতিবাদ
“মুজাহিদের পরামর্শেই আলবদর গঠন, নথি মিলল রাজশাহীতে” শিরোনামে ‘সময়নিউজ ডট টিভিতে’ প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের ডিফেন্স টিমের সদস্য ও জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের এ্যাডভোকেট জনাব মতিউর রহমান আকন্দ ১৫ ডিসেম্বর প্রদত্ত এক বিবৃতিতে বলেন,
“১৫ ডিসেম্বর সময়নিউজ ডট টিভিতে ‘মুজাহিদের পরামর্শেই আলবদর গঠন, নথি মিলল রাজশাহীতে’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ১৯৭১ সালে আলবদর গঠন করার প্রক্রিয়ার সাথে জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের জড়িত থাকার যে সব কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ছয়টি অভিযোগে বিচারের আয়োজন করেন। বিচার চলাকালে জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের আইনজীবীর এক প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে বলেছিলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত জনাব আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে ফরিদপুর জেলাধীন কোনো থানায় বা বাংলাদেশের অন্য কোনো থানায় ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত কোনো অপরাধের জন্য কোনো মামলা হয়েছে- এমনটা আমি আমার তদন্তে পাইনি।’ (পৃষ্ঠা: ১২৭: প্রসিকিউশন সাক্ষী নং ১৭। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান)।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেছিলেন, ‘আমার তদন্তকালে রাজাকার, আল বদর, আশ শামস বা শান্তি কমিটির কোনো তালিকায় জনাব আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের নাম ছিল মর্মে কিছু পাইনি।’ (পৃষ্ঠা: ১৩৩: প্রসিকিউশন সাক্ষী নং ১৭। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক খান)।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সমস্ত দলীল-দস্তাবেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আদালতের সামনে স্বাক্ষ্য প্রদানকালে এসব কথা বলেছিলেন। জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিচারের ৪ বছর পর রাজশাহীতে আলবদর বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়ার সাথে জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে জড়িয়ে যে সকল কল্প-কাহিনী তৈরি করা হয়েছে, তা যে কত বড় অসত্য কথা এখান থেকে তা স্পষ্ট বুঝা যায়।
প্রকৃতপক্ষে জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে আনিত কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। সকলেই অবগত আছেন ২টি অভিযোগে বিচারিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি সুপ্রীম কোর্টে আপীল করেন। আপীল বিভাগ ১টি অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়। জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ রায় প্রকাশের পর বলেছিলেন, ‘দুটো অভিযোগের একটিতে খালাস দেয়ার পর আর মৃত্যু্দণ্ড বহাল থাকার সুযোগ নেই। তারপরও আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ায় আমার উপর জুলুম করা হয়েছে।’
নাম স্বাক্ষরবিহীন কাল্পনিক কাগজপত্র তৈরী করে জনাব আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদকে জড়িয়ে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ এবং আলোচনা-পর্যালোচনা রাজনৈতিক নোংরামি ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা এ সকল কাল্পনিক, অসত্য তথ্য প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।”