বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ে জামায়াতের সকল কর্মীকে এগিয়ে আসতে হবে-মাওলানা মাসুম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেছেন, “বাংলাদেশ আজ কঠিন সময় অতিক্রম করছে। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির ফলে মানুষের নাভিশ্বাস। অন্যদিকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, মানবিক অস্থিরতা ও পাশবিকতা আজ গোটা সমাজ ব্যবস্থাকে বিষিয়ে তুলেছে। অসংখ্য পরিবারে মা-বাবা আজ নির্ঘুম জীবন অতিবাহিত করছেন। প্রিয় সন্তানকে গুম করা হচ্ছে, ক্রসফায়ারের নামে বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। শুধুমাত্র বিরোধী মতের কারণে হাজার হাজার মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করার মতো ন্যক্কারজনক বিষয়ও পরিলক্ষিত হচ্ছে। এইসব অসহায় পরিবারসহ দেশের জনগণের মুক্তির জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।”
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ বুধবার সকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লালমনিরহাট জেলা শাখা কর্তৃক আয়োজিত রুকন সম্মেলনে ভার্চুয়াল যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও লালমনিরহাট জেলা আমীর প্রভাষক আতাউর রহমান এর সভাপতিত্বে এবং জেলা সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু তাহের এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর মাওলানা আব্দুল হাকিমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মাওলানা এটিএম মা’ছুম আরো বলেন, “একজন মুসলিম হিসেবে রাসূলের (সা) জীবনাদর্শই আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি কুরআন দ্বারা পরিচালিত একটি কল্যাণ রাষ্ট্র আমাদের হাতে দিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। রাসূল (সা) বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি: আল্লাহর কুরআন ও আমার জীবনী হাদিস তথা সুন্নাহ। যতদিন তোমরা এই দুটি জিনিস আঁকড়ে ধরে থাকবে ততোদিন তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। পরবর্তীতে এই দু’টি-ই রাষ্ট্রের নির্বাহী কার্যক্রমে সঞ্চালকের আসনে ছিল। আজ আশ্চর্য হলেও সত্য উম্মাহর কাছে রাষ্ট্র পরিচালনার সেই বিধান আল কুরআন থাকলেও তা কার্যকর নেই। মুসলিম প্রধান এই বাংলাদেশের শিক্ষা ও সংস্কৃতিতেও কুরআনের কোনো প্রতিফলন নেই। যেটুকু নৈতিকতার কথা বলা হয়, সেটুকুও নানা কৌশলে বিদায় করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আবার যারা কুরআন বুঝি তারাও সঠিকভাবে আমল এবং সমাজে তার বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা করছিনা। এরকম দৈন্যতার মাঝে ইতোমধ্যেই এদেশে ইসলামের প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী উত্তীর্ণ হয়েছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এদেশের প্রতিটি মানুষ যেন উম্মাহর সঠিক পরিচয়কে চিনতে সক্ষম হয় সেজন্য প্রতিটি নাগরিকের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শ ও সংগঠনের বিপ্লবী আহ্বান পৌঁছে দিতে হবে।
প্রধান অতিথি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্দলীয় কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য দল মত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”