কিভাবে একটি জিমেইল একাউন্ট খুলবেন?
কীভাবে সফল অনলাইন মিটিং করবেন?
সফল অনলাইন মিটিংয়ের জন্য কী কী করতে হবে বা কী কী করলে সফল অনলাইন মিটিং করা যাবে এবং কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে, তা তুলে ধরা হলো—
সঠিক সফটওয়্যার ব্যবহার করুন:
অনলাইন মিটিং সম্পন্ন করার জন্য বর্তমান বিশ্বে নানা ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে। কোনটি আসলে আপনার প্রয়োজন, সেটি নিজেই বাছাই করতে হবে। তা ছাড়া কী কী ফিচার আপনার দরকার, সেটিও আপনিই জানবেন। সুতরাং একটি অনলাইন মিটিং শুরু করার আগে সঠিক সফটওয়্যার নির্বাচন খুবই জরুরি। আপনাদের সুবিধার জন্য কিছু অনলাইন কনফারেন্সিং সফটওয়্যারের নাম এবং লিংক সহ কাজের ধরন সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
জুম (Zoom):
জুম একটি সহজলভ্য সফটওয়্যার, যা আপনি ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। এটি একসঙ্গে ৫০০ জন অংশগ্রহণকারী এবং হাজারো দর্শক নিয়ে মিটিং সম্পন্ন করার সক্ষমতা রাখে। এই ফিচারটিই মূলত এই সফটওয়্যারটিকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সফটওয়্যারে পরিণত করেছে। অনলাইন ক্লাস করার জন্য এটি একটি উপযুক্ত সফটওয়্যার।
জুম অ্যাপে মিটিং করার জন্য শুরুতেই আপনাকে ‘জুম ক্লাউড মিটিংস’ নামের অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে। অ্যাপ ডাউনলোডের সময় কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, জুম নামের অনেক অ্যাপ রয়েছে। এগুলো দিয়ে অনেক ধরনের কাজ করা যায়। আপনি মিটিংয়ের জন্য যে অ্যাপটি চাচ্ছেন সেটিই ডাউনলোড করুন।
জুম অ্যাপ ডাউনলোডের পর ইনস্টল প্রক্রিয়া শেষ হলে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। গুগল কিংবা ফেসবুক অ্যাকাউন্টের সাহায্যেও জুম অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
জুম অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার পর নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাইন ইন বাটনে চাপ দিন; লগইন হওয়ার পর চারটি অপশন পাওয়া যাবে, এগুলো হলো- নিউ মিটিং, জয়েন, শিডিউল এবং শেয়ার স্ক্রিন; নিউ মিটিং অপশন থেকে আপনি মিটিং শুরু করতে পারবেন, এই অপশন থেকে জুম আইডি, ইমেইল অ্যাড্রেস বা মিটিংয়ের নাম ব্যবহার করে যে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে; জয়েন অপশনের মাধ্যমে অন্য কারও আমন্ত্রণে কোনও মিটিংয়ে যোগ দেওয়া যাবে, এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে মিটিং আইডি ও পাসওয়ার্ড; মিটিংয়ের শিডিউলের জন্য শিডিউল অপশন ব্যবহার করতে হবে, অন্যদিকে প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে শেয়ার স্ক্রিন অপশন; মিটিং শেষ হলে নিচের ডান কোণে থাকা ‘এন্ড মিটিং’ অপশনে ক্লিক করতে হবে।
link. https://bit.ly/3eQqL5r
গুগল মিট (Google Meet):
এই সফটওয়্যারটি মূলত গুগল হ্যাংআউটের প্রফেশনাল ভার্সন, যার সঙ্গে রয়েছে জি-সুইট। এটির মাধ্যমে সর্বোচ্চ ২৫০ জন অংশগ্রহণকারী নিয়ে মিটিং সম্পন্ন করা সম্ভব। এ ছাড়া এটিতে স্বয়ংক্রিয় ভিডিও রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
link. https://bit.ly/31nBbp4
মাইক্রোসফট টিমস (Microsoft Teams):
এটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা খুবই টেকসই কিন্তু সফটওয়্যারটি বেশ ব্যয়বহুল। তা ছাড়া এটিতে প্রায় সব ধরনের ফিচার রয়েছে যেগুলো আমাদের দরকার।
link. https://bit.ly/2YE2ny5
ওয়েবএক্স (Webex):
এই সফটওয়্যারটি একদম ফ্রি। এতে ১০০ জন অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি নিয়ে মিটিং করা সম্ভব। ওয়েবএক্সের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সিং, ওয়েবইনার, কল দেওয়া ও স্ক্রিন শেয়ারিং—এগুলো সবই করা সম্ভব।
link. https://bit.ly/2VprJxD
ডিসকর্ড (Discord):
এটিতে ৫০ জন লোক একসঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারবে একটি অনলাইন মিটিংয়ে।
link. https://bit.ly/2A8K8Hz
গুগল ডুয়ো (Google Duo):
স্মার্টফোনে গ্রুপ ভিডিও কলের জন্য একটি অন্যতম অ্যাপ হচ্ছে গুগল ডুয়ো। এই অ্যাপ এর ফাংশনগুলো খুবই সরল এবং অ্যাপটি ব্যাবহার করাও খুব সহজ। গুগল ডুয়ো এর মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৮ জনের সাথে একই সময়ে ভিডিও কনফারেন্স করা যায়।
যারা সাধারণত প্রযুক্তি সম্পর্কে কম বোঝেন তাদের জন্য এই অ্যাপটি কর্যকরী। অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, কম্পিউটার এবং ওয়েব সংস্করনে রয়েছে গুগল ডুয়ো।
https://bit.ly/3g3NvyV
অভো (OVO):
অভো একটি ফ্রি অ্যাপ্লিকেশন। এখানে সর্বোচ্চ ১২ জনের সাথে একই সময়ে ভিডিও কনফারেন্স করা সম্ভব হয়। এটি ব্যাবহার করার মাধ্যমে ভিডিও রেকর্ডিং করা যায়। ভিডিও কনফারেন্সে থাকা সবাই মিলে একসাথে ইউটিউবে ভিডিও দেখা সম্ভব হয় এই অ্যাপ এর মাধ্যমে।
অভো এর প্রিমিয়াম ভার্সনও রয়েছে যেখানে বিজ্ঞাপন ব্লক করা যায়। অভো অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, কম্পিউটার, আমাজন ফায়ার এবং ওয়েব সংস্করনে পাওয়া যায়।
https://bit.ly/2BEmDqh
গুগল হ্যাংআউটস (Google Hangouts):
গ্রুপ ভিডিও কলিং এর জন্য হ্যাংআউট অত্যন্ত কার্যকরী একটি অ্যাপ। বিশেষ করে স্মার্টফোনের জন্য। ভিডিও কলে একই সময়ে ১০ জন কথা বলার জন্য হ্যাংআউট ব্যাবহার করা যায়। মিটিং এ সবার উপস্থিতি নিশ্চিতের লক্ষ্যে হ্যাংআউটে একটি লিংক তৈরি করা যাইয় যার মাধ্যমে অন্যান্যরা অনলাইন মিটিং এ যোগ দিতে পারেন।
হ্যাংআউটে ৭২০ পিক্সেল রেজুলেশন পর্যন্ত ভিডিও কলিং করা সম্ভব হয়। অ্যাপটি উইন্ডোজ, ম্যাক, আইওএস, লিনাক্সের এবং ওয়েব সংস্করনে রয়েছে।
https://bit.ly/2YDCwGu
স্কাইপ (Skype):
স্কাইপ দিয়ে গ্রুপ ভয়েস কলে ২৫ জন পর্যন্ত এবং ভিডিও কনফারেন্সে ১০ জন পর্যন্ত অংশগ্রহণ করতে পারে। স্কাইপ একটি ফ্রি অ্যাপ। তবে প্রিমিয়াম ভার্সনে ২৫০ জন পর্যন্ত ভিডিও কলে সংযুক্ত হতে পারে।
স্কাইপ উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স, অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, উইন্ডোজ ফোন, এবং এক্সবক্স ওয়ান এর অপারেটিং সিস্টেমে কাজ করে।
https://bit.ly/3eF0Yg6
ফ্রিকনফারেন্স (Free Conference):
ফ্রিকনফারেন্স অ্যাপটি ব্যাবসায়িক কাজে বেশি ব্যাবত হয়। ফ্রিকনফারেন্স দিয়ে কম খরচে আন্তর্জাতিক কল করা যায়। এটিতে ওয়েটিং টিউন ঠিক করা যায়। পিসি ও মোবাইল দুই ক্ষেত্রেই এটি কাজ করতে পারে।
https://bit.ly/2B7WTCW
নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করে নিন:
মিটিং যতই ছোট হোক না কেন, শুরুর করার পূর্বে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম তৈরি করে নিন। যাতে কেউ মিটিং চলাকালীন অপেশাদারত্বের পরিচয় না দেয়। খুব সাধারণ কিছু নিয়ম যেমন মোবাইল নীরব করে রাখা, মিটিং চলাকালীন অযাচিত কথা না বলা, আপনার পাশে যাতে সবকিছু নীরব থাকে সে ব্যবস্থা করা এবং মিটিং চলাকালীন অন্য কোনো কাজ না করা ইত্যাদি নিয়মগুলো সবারই মেনে চলা উচিত। এ ছাড়া উচ্চ শব্দ যুক্ত স্থানে বসে কখনো অনলাইন মিটিংয়ে অংশ্রগ্রহণ করবেন না। সবার জন্য ন্যূনতম একটি কম্পিউটার বা স্মার্টফোন, মাইক্রোফোন, ওয়েবক্যাম ও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করুন।
আলোচ্যসূচি তৈরি করুন:
একটি মিটিংয়ে যেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, সেগুলো নোট করে ফেলুন। ক্রমানুসারে লিখে ফেলুন, যাতে আলোচনার সময় কোনো ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে না হয়। বিষয়গুলোর পাস সময়ও লিখে ফেলুন। ফলে সময়ের দিকে খেয়াল থাকবে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব কটি বিষয় কভার করতে পারবেন।
সবাইকে মিটিংয়ের আগে অবহিত করুন:
করোনকালীন প্রায় সবাই যেহেতু বাড়িতে অবস্থান করছে, তাই পরিবারের সঙ্গে ব্যস্ত থাকাটাই স্বাভাবিক। এ জন্য মিটিংয়ের পূর্বে সবার সুবিধা–অসুবিধা এবং সময় জেনে এরপর মিটিংয়ের সময় এবং তারিখ ঠিক করা উচিত। যাতে মোটামুটিভাবে সবাই অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান। এ ক্ষেত্রে সঠিক যোগাযোগ দক্ষতা আপনার কাজকে আরও সহজ করে দিতে পারে। আর হ্যাঁ সবার অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়—এই ব্রত নিয়ে মিটিং আহ্বান করুন। এই কাজের জন্য World Time Buddy ও World Clock Meeting Planner ব্যবহার করতে পারেন।
সবাইকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করুন:
আপনার টিম মেম্বারদের সবাইকে মিটিংয়ে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করুন, যাতে করে মিটিংটি ফলপ্রসূ হয়। প্রত্যেকের পরিচয় এবং কাজ সম্পর্কে তাদের মতামত শুনুন। তাদের প্রশ্ন করার বা কথা বলার সুযোগ দিন।
সবাইকে মিটিংয়ের সারসংক্ষেপ দিন:
মিটিং শেষ হলে আবার কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে, তা সংক্ষেপে তুলে ধরুন; যাতে সহজে সবার মনে থাকে। প্রয়োজন আলোচনার বিষয়বস্তু, কাজের বিবরণ ও কাজ জমা দেওয়ার তারিখ উল্লেখ করে সবাইকে ই–মেইল করে দিন।