স্বৈরাচার পতন দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও জুলুমতন্ত্র মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে-ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আমীর
আজ ৬ই ডিসেম্বর, স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবসের আলোচনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ১৯৯০ সালের এই দিনে দীর্ঘ ৯ বছরের সংগ্রাম আন্দোলনের পর পতন ঘটেছিলো স্বৈরশাসনের। স্বৈরশাসক এরশাদ ৮২ সালে পেশাগত বিশ্বস্ততা ও শপথ ভেঙ্গে বন্দুকের নলের মুখে নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক শাসন জারীর মাধ্যমে সাংবিধানিক রাজনীতি স্তব্ধ ও গণতন্ত্র নস্যাৎ করেছিলেন। এরপরে এই স্বৈরশাসক একে একে সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্ত করেছিল। দীর্ঘ নয় বছরের গণআন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ৯০ এর ৬ ডিসেম্বর ছাত্র-জনতার মিলিত শক্তিতে স্বৈরাচারকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিলো দেশের গণতন্ত্র। বর্তমান আওয়ামী স্বৈরশাসনে বাংলাদেশ আবারো গভীর সংকটের আবর্তে নিমজ্জিত। এখানে আইনের শাসন ভূলন্ঠিত, গণতন্ত্র নির্বাসিত ও মানবাধিকার বিপন্ন। চারদিকে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের হাহাকার। দেশের গণতন্ত্র ও মানুষকে মুক্ত করতে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে প্রয়োজন এই স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করা। যা এই জাতির ভবিষ্যৎ রচনা করবে। সেই লক্ষ্যে আওয়ামী স্বৈরাচারের হাত থেকে জনগণকে মুক্ত করতে তিনি সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে উদাত্ত আহবান জানান।
আজ সকালে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে স্বৈরাচার পতন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারী ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মনজুরুল ইসলাম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি এডভোকেট ড. মোঃ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারি সেক্রেটারি মুহা. আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম। এছাড়াও আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য শাহীন আহমদ খান, আশরাফুল আলম ইমন প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আজকে দেশে আমাদের ভোট ও ভাতের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখানে আধিপত্যবাদী ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিরোধী অপশক্তির নানা ষড়যন্ত্র বিদ্যমান। তাই স্বৈরাচার পতন দিবসের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ ও জুলুমতন্ত্র মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আমরা দাবী জানাতে চাই অবিলম্বে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনার পথ উম্মুক্ত করতে হবে। তিনি সাধারণ জনগণকে দেশ, জাতিস্বত্ত্বা, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও ইসলাম বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তোলার আহবান জানান।
মঞ্জুরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, গণতন্ত্রের ধারাকে নস্যাৎ করে বিভিন্ন সময়ে এদেশের মানুষকে নিয়ে নানামুখী ষড়যন্ত্র হয়েছে এবং এই ষড়যন্ত্রের ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তবে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে প্রমাণিত যে, সাময়িকভাবে স্বৈরশাসকেরা ভালো থাকলেও স্থায়ীভাবে এরা ঘৃণিত ব্যক্তিতে পরিণত হয়েছে। আশাকরি আজকের নব্য স্বৈরাচারদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। নচেৎ তারাও একদিন মানুষের চরম ঘৃণার পাত্রে পরিণত হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, পৃথিবীর সকল স্বৈরশাসক মনে করে আমরা সবদিক থেকে ঠিকঠাক মত আছি। কিন্তু বাস্তবতা তার উল্টো, এমন একটি পথ ঠিকই সে খুলে রাখে যেখান দিয়ে তার পরাজয় নিশ্চিত হয়। আজকেও যারা দেশে স্বৈরাচারী হয়ে মানুষের ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ব্যস্ত রয়েছে তাদের পতন খুবই সন্নিকটে। আজকে আমাদেরকে তারা চার দেয়ালে আবদ্ধ করে রাখতে চায়। অথচ আল্লাহর পরিকল্পনা দেখুন স্বৈরশাসকেরা নিজেরাই নির্দিষ্ট সীমারেখায় বন্দি হয়ে গেছে।