15 49.0138 8.38624 arrow 0 both 0 4000 1 0 horizontal https://bjingm.org 300 4000 - 0
সর্বশেষ সংবাদ
আমাদের প্রকাশনী

ভাস্কর্য স্থাপনের ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহবান

ভাস্কর্য স্থাপনের ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডাঃ শফিকুর রহমান ৩ ডিসেম্বর ২০২০ এক বিবৃতি প্রদান করেছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ একটি মুসলিম রাষ্ট্র। সাংবিধানিকভাবে এ দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দেশের ধর্মপপ্রাণ মানুষ যুগযুগ ধরে ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে নিজেদের জীবন পরিচালনার চেষ্টা করে আসছে। আমরা লক্ষ্য করছি, সাম্প্রতিককালে মূর্তি নির্মাণ নিয়ে ইসলামী আদর্শ ও শরীয়াহ বিরোধী এক অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্কের অবতারণা করা হয়েছে। কারো কারো পক্ষ থেকে ভাস্কর্য ও মূর্তি এক নয় বলে দেশব্যাপী ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, মূর্তি ও ভাস্কর্য একই। ভাস্কর্য ও মূর্তি নির্মাণ করা ইসলামে নিষিদ্ধ। কোনো প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরি করা ইসলামে শিরক বলে গণ্য করা হয়েছে। যারা এটাকে শিল্প বলে যুক্তি দিচ্ছেন তারা যদি কুরআন হাদীস থেকে এর সপক্ষে কোনো স্পষ্ট প্রমাণ পেশ করতে পারেন তাহলে জনমনে কোনো প্রশ্ন থাকবেনা। এটা তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব হবেনা। কিছু লোক আল্লাহর ঘর বায়তুল্লাহকে ভাস্কর্য বলেছেন। নির্বোধ ব্যক্তিদের এটা বাড়াবাড়ি। কোনো কোনো ব্যক্তি ভাস্কর্যের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করতে গিয়ে অতীতের কিছু উদাহারণ টানেন। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে এটা সর্বাবস্থায় পরিত্যাজ্য এবং হারাম। অন্য ধর্মাবলম্বীগণ তাদের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে উপাসনালয়ে কিংবা নিজ নিজ স্থাপনায় মূর্তি সংরক্ষণ করলে তাতে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু উন্মুক্ত স্থানে মূর্তি বা ভাস্কর্য স্থাপনের কোনো অনুমতি ইসলাম দেয়নি। কেউ কেউ মূর্তি ও ভাস্কর্য নির্মাণকে বৈধ করার এবং এ ব্যাপারে যুক্তি তুলে ধরার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন যা মুসলিম জাতির জন্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে কোনো প্রাণীর মূর্তি নির্মাণ করা কবিরা গুনাহ ও হারাম। মূর্তি সংগ্রহ, মূর্তি নির্মাণ, এবং মূর্তির বেঁচাকেনা ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘‘এবং তারা বলেছিল, তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে এবং কখনো পরিত্যাগ করো না ওয়াদ্দ, সুওয়া, ইয়াগূছ, ইয়াঊক ও নাসরকে। অথচ তারা অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে” (সূরা নূহ আয়াত ২৩-২৪)।

এই আয়াতে উল্লিখিত মূর্তিগুলো সম্পর্কে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বলেন, ‘এগুলো হচ্ছে নূহ (আ:) এর সম্প্রদায়ের কিছু পূণ্যবান লোকের নাম। তারা যখন মৃত্যুবরণ করেছে তখন শয়তান তাদের সম্পদায়কে এই কুমন্ত্রণা দিয়েছে যে, তাদের স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলোতে মূর্তি স্থাপন করা হোক এবং তাদের নামে সেগুলোকে নামকরণ করা হোক। লোকেরা এমনই করল। ওই প্রজন্ম যদিও এই সব মূর্তির পুজা করেনি কিন্তু ধীরে ধীরে প্রকৃত বিষয় অস্পষ্ট হয়ে গেল এবং পরবর্তী প্রজন্ম তাদের পূজায় লিপ্ত হলো। (সহীহ বুখারী হাদীস নং: ৪৯২০)।

কুরআন হাদীসের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ বা স্থাপনের কোনো অনুমতি ইসলাম দেয়নি। মূর্তি বা ভাস্কর্য এক নয় মর্মে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করছেন তারা অত্যন্ত গর্হিত কাজ করছেন। আপামর জনগণের ঈমানী চেতনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মধ্যেই কল্যাণ। আমরা ভাস্কর্যের নামে মূর্তি নির্মাণ করার মত ইসলাম বিরোধী এই কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি”।