ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের জন্য আল্লাহর উপর ভরসা করে সাহসিকতার সাথে ময়দানে তৎপরতা চালাতে হবে
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমাদের এই প্রিয় জন্মভূমিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একদল সৎ ও দক্ষ লোকের প্রয়োজন। জামায়াতে ইসলামী সেই সৎ ও দক্ষ লোক তৈরির কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যাশিত ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের জন্য দায়িত্বশীলদের পাগলপারা হয়ে আল্লাহর উপর ভরসা করে সাহসিকতার সাথে ময়দানে তৎপরতা চালাতে হবে। হযরত হানজালার (রা.) মতো বিপ্লবী চরিত্রকে ধারণ করতে হবে। রাজধানী একটি রাষ্ট্রের হৃদপিণ্ড। যারা রাজধানীতে শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখতে পারে তারাই দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জাতিকে নেতৃত্ব দেয়। তাই ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নেতৃবৃন্দকে রাজধানীতে ইসলামী আন্দোলনের ভিত্তিকে আরও মজবুত করতে হবে। রাজধানীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। গভীর রাতের পরে সুবহে সাদিকের আভা দেখা যাচ্ছে। জাতির মুক্তির সূর্য উদিত হবেই ইনশাআল্লাহ।”
তিনি আজ ১৭ই মে জুমাবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে আয়োজিত থানা আমীর ও বিভাগীয় সভাপতি এবং সেক্রেটারীদের নিয়ে দিনব্যাপী কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর আব্দুস সবুর ফকির ও এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, মুহাম্মদ কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর সকল কার্যক্রম গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হয়। ফলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে বারবার গঠনতন্ত্র পড়ে তা অনুধাবন করতে হবে এবং সেই আলোকে আমরা নিজেরা কাজ করে যাচ্ছি কিনা তা পর্যালোচনা করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে শয়তানের কু-মন্ত্রনা থেকে বেঁচে থাকতে হবে। আল্লাহ ভীতি বাড়িয়ে নিজেদের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত সংশোধন আনতে হবে। সকল কাজে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। নামাজের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। রাতের একটা অংশ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের ইবাদতের জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। নিজেদের লেনদেনকে আরও পরিচ্ছন্ন করতে হবে। হালাল হারামের বিধান মেনে চলার ক্ষেত্রে আরও কঠিন হতে হবে। নিজেদের পরিবারকে জান্নাতি পরিবার বানাতে হবে, সন্তানদেরকে ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত করাতে হবে। মানবিকতাকে প্রাধান্য দিয়ে ইসলামের আনসার সাহাবীদের মতো সহকর্মী ও সমাজের মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
মাওলানা এটিএম মা‘ছুম বলেন, “ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্বকে তাকওয়ার ভিত্তিতে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা এদেশের মানুষকে ইসলামের সু-মহান আদর্শের দিকে আহবান জানাচ্ছি। আখেরাতে জাহান্নামের কঠিন আযাব থেকে মুক্তির জন্য তাদেরকে আল্লাহর খাটি বান্দাহ হিসেবে জীবন গঠনের আহবান জানাচ্ছি। ফলে একজন দায়িত্বশীল হিসেবে আমাদের শারীরিক ও নৈতিক শক্তিতে বলীয়ান হতে হবে। নিজেদের আধ্যাত্মিকতা বা রুহানি শক্তির মাধ্যমে এদেশের মানুষ ও জনশক্তিকে প্রভাবিত করতে হবে। রাজধানীকে ইসলামী আন্দোলনের দুর্জয় ঘাটিতে পরিনত করতে হবে। জাকাত ভিত্তিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও খেলাফতে ইলাহিয়া প্রতিষ্ঠায় নিজেদের সর্বশক্তিকে নিয়োগ করতে হবে।”
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এদেশে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। জাতির মুক্তির জন্য ইকামাতে দ্বীনের আন্দোলনকে বেগবান করতে থানা দায়িত্বশীলদের ময়দানে আরও তৎপর হতে হবে। একটি সুন্দর সমাজ বিনির্মাণের জন্য নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে আন্দোলনকে বিজয়ী করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাকে ইসলামী আন্দোলনের রাজধানীতে পরিণত করতে হবে। তাই বার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য মহানগরীর দিক নির্দেশনা সমূহ নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যথাযথ বাস্তবায়নে থানা আমীর সেক্রেটারি ভাইদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।”